বরাহ স্তব করিতে লাগিলেন । তংপরে তিনি দৈত্যরাজ হিরুপাক্ষকে জলমধ্যে বধ করেন । [ হিরণ্যাক্ষ দেখ ] ( ভাগবত ৩১৩-২০ অ• ) কালিকাপুরাণে লিখিত আছে যে, ভগবান বরাহদেব ধরিত্রীকে উদ্ধার করিয়া পৃথিবীতে যথেচ্ছ বিচরণ করিতে লাগিলেন, ধরা প্তাহার ভার কিছুতেই সহ করিতে না পারিয়া মহাদেবের শরণাপন্ন হন। তখন মহাদেব বরাহরূপী বিষ্ণুকে বলিয়াছিলেন, দেব ! আপনি যে জষ্ঠ বল্লাহদেহ ধারণ করিয়াছিলেন, তাহ সম্পন্ন হইয়াছে, এখন ধরা আপনার বহনে অসমর্থ হইয়া বিশীর্ণ হইতেছেন, অতএব আপনি বরাহশরীয় ত্যাগ করুন। বিশেষতঃ আপনি জলময় প্রদেশে কামিনী পৃথিবীর কামনা পূর্ণ করিয়াছেন। স্ত্রীধৰ্ম্মিণী পৃথিবী আপনার তেজে দারুণ গৰ্ভধারণ করিয়াছেন । সেই গর্ত হইতে যাহার উৎপত্তি হইবে, সেই পুত্র দেবদ্বেষী অসুরভাবাপন্ন হুইবে । রজস্বলাসঙ্গমে দুষ্ট অনিষ্টকারক এই কামুক বরাহদেহ 烹碎例夺邓可{ বরাহুদেব মহাদেবের এই বাক্য শুনিয়া তাহাকে বলিয়াছিলেন যে, মহাদেব! তোমার বাক্যামুসারে আমি এই বরাহ দেহ ত্যাগ করিব এবং পুনরায় লোকহিতের জন্ত আশ্চৰ্য্য বরাহদেহ ধারণ করিব । বরাহদেব এই কথা বলিয়া সেইস্থানেই অন্তষ্ঠিত হইলেন । বরাহদেব অস্তুষ্ঠিত হইলে মহাদেব স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন । বরাহুদেব সেইস্থান হইতে যাইয় লোকালোক পৰ্ব্বতে বরাহরূপিণী মনোরম পৃথিবীর সহিত রমণ করিতে লাগিলেন। বরাহরূপী বিষ্ণু পৃথিবীর সহিত বহুকাল ক্রীড়া করিয়াও তৃপ্তিলাভ করিলেন না । তদনন্তর বরাহদেবের বীৰ্য্যে পৃথিবীর গর্ভে মহাবলশালী সুবৃত্ত, কনক ও ধোর নামে তিনটা পুত্র জন্মিল । বরাহুদেব এই সকল পুত্ৰগণে পরিবৃত হইয়া নানারূপ ক্রীড়া করিতে লাগিলেন । সেই ভারে পৃথিবীর মধ্যদেশ নম্র হইয় পড়িল । অনন্তদেব কুৰ্ম্মকে আক্রমণ করিয়া পৃথিবী মধ্যস্থায়ী বরাহদেবের বহনব্যথায় ভগ্নমস্তক ও মাতঙ্কিত হইলেন । এইরূপে পুত্র-পরিবৃত বরাহদেবেন্ধ ভায়ে পৃথিবীতে নানাবিধ উৎপাত হইতে লাগিল, সুমেরুর শৃঙ্গ সকল ভগ্ন, মানসাদি সরোবর আবিল ও কল্পক্ষম ভগ্ন হইল। অনন্তর দেবগণ লোকহিভের নিমিত্ত দেবেন্দ্র ও দেবযোনি সমূহের সহিত মন্ত্রণা করিয়া ভগবান বিষ্ণুর স্তব করিতে লাগিলেন। ভগবান দেবগণের স্তৰে তুষ্ট হইয়া বলিলেন, তোমরা যে তয়ে স্ত্রীত হইয়া আমার নিকট আগমন করিয়াছ, আমা দ্বারা কি প্রকারে সেই স্তরের শাস্তি হইবে, তাহা শাস্ত্র I do e ] বরাহ । করিয়া বল। দেৰগণ কহিলেন, বরাহের ক্রীড়া হেতু পৃথিবী দিন দিন শীর্ণ হইতেছেন, লোক সকল সেই উদ্বেগে শান্তিলাভ করিতে পারিতেছে না। শুষ্ক অলাৰু ফলের উপর আঘাত করিলে তাহা যেরূপ ভগ্ন হইয়া যায়, বরাহের ক্ষুরের আঘাতে পৃথিবীও সেই প্রকার বিদীর্ণ হইতেছেন। আপনি সৃষ্টিস্থিতির জন্য আপনার এই ভয়ঙ্কর রূপ সংহার করুন । তখন জনাৰ্দ্দন দেবগণের এই কথা শুনিয়া ব্ৰহ্মা ও মহাদেবকে বলিলেন, জগতের দুঃখের কারণস্বরূপ এই বরাহদেহ আমি ত্যাগ করিব, কিন্তু সুখাসক্ত এই দেহকে স্বেচ্ছাক্রমে ত্যাগ করিতে সমর্থ হইব না। অতএব ব্ৰহ্মন! তুমি মহাদেবকে নিজ তেজে পুষ্ট কর, দেবগণ মহাদেবকেও আপ্যায়িত করুন । রজস্বলার সঙ্গমে এবং ব্রাহ্মণাদির বধহেতু পাপপূৰ্ণ প্রাণকে আমি স্বচ্ছলো ত্যাগ করিব। তখন ভগবান বিষ্ণু দেবগণের আদেশে বরাহদেহ হইতে স্বকীয় তেজ আকর্ষণ করিতে লাগিলেন । তেজ আকৃষ্ট হইলে বরাহদেহ সত্ত্বহীন হইল দেখিয়া মহাদেব দেবগণের সহিত তেজোহীন বরাহদেবের সমীপে উপস্থিত হইলেন। ব্ৰহ্মাদি দেবগণ মহাদেবের তেঞ্জোবিস্তারের নিমিত্ত্ব পশ্চাৎ পশ্চাৎ " আগমন করিলেন এবং নিজ নিজ তেজ মহাদেবের দেহে সঞ্চার করায় তিনি অত্যন্ত বলবান হইয়া উঠিলেন। তদনন্তর মহাদেব উদ্ধ এবং অধোদেশে অষ্টচরণসমন্বিত ভয়ানক শরভরুপ ধারণ করিলেন। তখন বরাহ ও শরভে তুমুল যুদ্ধ আরম্ভ হইল। পরে শরভরপী মহাদেব কর্তৃক বরাহদেব যুদ্ধে নিহত এবং তৎপরে তাছার মহাবলশালী পুত্র পৌত্রগণও শরভের দারুণ আঘাতে বিনষ্ট হন । এইরূপ কৌশলে বরাহদেব নিহত হইলে তাহার দেহ হইতে যজ্ঞ সকল প্রাচুভূত হইল। শরভকর্তৃক বরাহদেহ বিদারিত হইলে ব্ৰহ্মা, বিষ্ণু ও প্রমথগণের সহিত মহাদেব জল হইতে সেই দেহকে গ্রহণ করিয়া আকাশে গমন করিলেন এবং বিষ্ণু সুদৰ্শনচক্র দ্বারা সেই দেহ খণ্ড খণ্ড করিয়া কাটিয়া ফেলিলেন । এষ্ট বরাহদেবের ক্রদ্বয় ও নাসিকাদেশের সন্ধিভাগ জ্যোতিষ্ট্রোম নামক যজ্ঞরূপে পরিণত হইল। কপোলদেশের উচ্চস্থান হইতে কৰ্ণমূলের মধ্যস্থিত সন্ধিভাগ ৰহিক্টোমযজ্ঞ, চক্ষু ও ক্রদ্বয়ের সন্ধিভাগ পেনৰ্ভৰন্তোম যজ্ঞ, জিহ্বামূলীয় সন্ধিভাগ বৃক্ষন্তোম এবং বৃহৎস্তোম, জিহাদেশের অধোড়াগ হইতে অতিরাত্র এবং বৈরাজ যজ্ঞ হইল। অশ্বমেধ, মহামেষ এবং নরমেধ প্রভৃতি প্রাণিহিংসাকয় যে সকল যজ্ঞ আছে, হিংসাপ্রবর্তক সেই সকল যজ্ঞ চরণসদ্ধি হইতে ; রাজস্বয়, বাজপেয় এবং গ্রহযজ্ঞ সকল পৃষ্ঠসন্ধি হইতে ; প্রতিষ্ঠা, উৎসর্গ,দান, শ্রদ্ধা এবং সাবিত্রী প্রভৃতি যজ্ঞ ৰূদয়সন্ধি হইতে ; উপনয়নাদি সংস্কাৰক যজ্ঞ এবং প্রায়শ্চিত্ত
পাতা:বিশ্বকোষ সপ্তদশ খণ্ড.djvu/৫৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।