বর্ণলিপি { ৫৯৮ ] বর্ণলিপি
- ভারতবর্ষে এইরূপে নানা লিপি প্রচলিত থাকিলেও সকল লিপির ঠিক রূপ নির্দেশ করা কঠিন। ভারতের বিভিন্ন রাজবংশের রাজত্বকালে কোন বংশের ব্যবহৃত লিপি কতদূর প্রচলিত ছিল, সংক্ষেপে তাহারই পরিচয় দেওয়া যাইতেছে ।
भ११ अप्रििी द| (यो६ालिस्टोि ! মৌর্য্য-সম্রাটু অশোক যে ব্রাহ্মী লিপি ব্যবহার করিতেন, 19মালয়ের তরাই হইতে সিংহল পর্য্যস্ত সেই লিপির নিদর্শন বাহির হইয়াছে। মহাবংশ হইতেও আমরা জানিতে পারি যে, অশোকের এক পুত্র ও এক কল্প সিংহলে বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রচার করিতে গিয়াছিলেন । তাহীদের সহিত মাগধ ব্রাহ্মীলিপি ও গিয়াছিল, তাহারই নিদর্শন সিংহলে খৃষ্টপূৰ্ব্ব ১ম শতাকে উৎকীর্ণ অভয়গামিনীর শিলালিপিতে পাওয়া গিয়াছে । কেবল সিংহল বলি কেন, চীনসমুদ্রের তীরবর্তী কম্বোজ ও অন্নম রাজ্য হইতেও ব্রাহ্মী লিপির বিকাশ দৃষ্ট হয়। পূৰ্ব্বেই লিখিয়াছি যে, দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণাজেলায় ভট্রিপ্রোণু হইতে যে দ্রাবিড়-ব্রাহ্মীলিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহার যুক্তস্বরের সামান্ত প্রভেদ ছাড়া অপরাপর বর্ণের সহিত সেরূপ পার্থক্য নাই। স্থানভেদে লিপিকরের হাতে ক্রমে ক্রমে পৃথক্ হুইয়া পড়িতেছিল। পিপরাবার খৃষ্টপূৰ্ব্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীর লিপি ও তৎপরবর্তী খৃষ্টপূৰ্ব্ব ১৫০ অব্দে উৎকীর্ণ নানাঘাটের আন্ধ লিপি অর্থাৎ ঐ সময়ের আর্য্যাবর্তের সমুদয় লিপি প্রায় একই রূপ —ইহাতে বেশ দেখা যাইতেছে যে, ভারতবর্ষে প্রায় ৫০০ বর্ষ কাল একই লিপি সমভাবে চলিয়াছিল, পিপ রাবার পুর্ণাবয়ব লিপি হইতে মনে হইবে যে, তংপুর্বে ও অন্ততঃ ৫০০ বর্ষ কাল অর্থাৎ বর্তমান সময় হইতে প্রায় ৩০ • • বর্ষ ভারতে সেই এক প্রকার ব্রাহ্মীলিপি প্রচলিত থাকাই সস্তুবপর। যাহা হউক, আবিষ্কৃত শিলালিপিসমূহ আলোচনা করিয়া মনে হইতেছে, প্রাচীন লিচ্ছবিবংশ, মন্দবংশ, মৌর্য্যবংশ, চেতবংশ এবং শুঙ্গমিত্রবংশের রাজত্বকালে । প্রায় এক প্রকার ব্রাহ্মী লিপিষ্ট প্রচলিত ছিল । তৎপরে ভারতের উত্তরপশ্চিম সীমায় শকাধিপত্য বিস্তারের : সহিত ব্ৰাহ্মী লিপির আকার সামান্ত সামান্য পরিবর্তন হইতে । থাকে ; সেই ব্রাহ্মীলিপি ইতিহাসে শকলিপি নামে গণ্য হইবার যোগ্য। মথুরা, সুরাষ্ট্র প্রভৃতি স্থান হইতে শকলিপি আবিষ্কৃত | হইয়াছে । এই সময়ে দাক্ষিণাত্যে সাতবাহন-রাজবংশের যে সকল লিপি পাওয়া গিয়াছে, তাং মৌর্য বা শকলিপির সংস্কার ; বলিয়াই মনে করি। নাসিকে কদম্ব, জুয়র ও জগয্যপেটে অন্ধভৃত্য এবং কাঞ্চী প্রভৃতি স্থানে পল্লব রাজবংশের যে সকল লিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, শকলিপির অক্ষরের সহিত ঐ সকল লিপিব । সাপ্ত আছে। এই শকব্রাহ্মী লিপি ইষ্টতে কিরূপে বর্তমান উত্তর-ভারতীর নাগরী ও গৌডুলিপি উৎপত্তি হইল, অপর পৃষ্ঠায় ভারতীয় ব্রাহ্মী লিপির তালিকা দেখিলেই জানা যাইবে । দাক্ষিণাত্যলিপি । বিন্ধ্যাদ্রির দক্ষিণে গুজরাত, কাঠিয়াবাড় পর্য্যন্ত যে লিপি প্রচলিত, তাহাকেই আমরা দাক্ষিণাত্য লিপি বলিয়া গ্রহণ করিলাম। পুঝে যে দ্রাবিড়ী ব্রাহ্মী লিপির কথা লিখিয়াছি, তাহাই সমস্ত দাক্ষিণাত্য লিপির জননী । কৃষ্ণা জেলার ভট্রিপ্রোঙ্গু হইতে আবিষ্কৃত দ্রাবিড়ী ব্রাহ্মীর কথা পূৰ্ব্বে জানাইয়াছি, আর্য্যাবর্তে গুপ্ত ও তদনুবৰ্ত্তী বিভিন্ন ংশের লিপির স্থায় দাক্ষিণাত্যেও সেই দ্রাবিড়ী লিপি হইতে তথাকার আন্ধ, শক, গুপ্ত, বলভা, গুর্জর, বাকাটক, কদম্ব, প্রাচ্য ও প্রতীচ্য চালুক্য, চের, চোল, পল্লব, গঙ্গ, রাষ্ট্রকুট, কাকতীয়, বাণ, পাগু্য প্রভৃতি রাজবংশের বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত লিপিসমূহ ক্রমশঃ পরিপুষ্ট হইয়াছে। জুনাগড়, গিরনার প্রভৃতি স্থানের খৃষ্টয় ১ম হইতে ৩য় শতাব্দীর শকক্ষত্রপ লিপি, নাসিক, কুড়, জুন্নব, কণ্যের প্রভৃতি স্থান হইতে খৃষ্টীয় ১ম হইতে ৩য় শতাব্দীয় সাতবাহন-লিপি, কৃষ্ণা জেলার জগযপেট হইতে খৃষ্টীয় ৩য় শতাকে উৎকীর্ণ অলঙ্কত ইক্ষাকুরাজ সিরিবার পুসিদত্তে'র লিপি, কাঞ্চীপুর হইতে খৃষ্টীর ৪র্থ শতৰে উৎকীর্ণ পল্লবলিপি, সাধা ও মন্দসোর ইষ্টতে খৃষ্টায় ৫ম ও ষষ্ঠ শতাদে প্রচলিত গুপ্তলিপি, সুরাষ্ট্র ও গুজরাত হইতে খৃষ্টীয় ৬ষ্ঠ হইতে ৮ম শতাঝে উৎকীর্ণ বলডীরাজবংশের লিপি, ৬ষ্ঠ ও ৮ম শতাব্দীর মধ্যে উৎকীর্ণ গুজ্জররাজবংশের লিপি, মধ্যপ্রদেশে ৫ম ও যষ্ঠ শতব্দে উৎকীর্ণ . বাকাটক রাজবংশের লিপি, নাসিক জেলার খৃষ্টীয় ৫ম শতাদে উৎকীর্ণ কদম্বরাজগণের লিপি, কর্ণাট ও মহারাষ্ট্র হইতে খুষ্ঠায় ৬ষ্ঠ হইতে ৮ম শতাদের প্রতীচ্য চালুক্য রাজবংশের লিপি, গোদাবরী ও কৃষ্ণা জেলা হইতে খৃষ্টীয় ৭ম শতাদের প্রাচ্য চালুক্য রাজগণের লিপি, কাঞ্চী ও তাছার নিকটবৰ্ত্তী স্থান হইতে খৃষ্টীয় ৫ম হইতে ৭ম শতাব্দীর পল্লবরাজগণের লিপি, মহিমুর হইতে খৃষ্টায় ৭ম শতাব্দীর গঙ্গ ( দক্ষিণশাখা ; ও চেবরাষ্ট্রগণের লিপি, গুজরাত ও কর্ণাট হইতে আবিষ্কৃত রাষ্ট্রকূটলিপি, কলিঙ্গের খৃষ্ট’যু ৯ম হইতে ১২শ শতাৰো উৎকীর্ণ গঙ্গরাজগণের লিপি উল্লেখযোগ্য। ঐ সকল বিভিন্ন লিপি আলোচনা করিলে আমরা বেশ বুঝিতে পারি কলিঙ্গের গঙ্গলিপি হইত্তে বৰ্ত্তমান উড়িয়া, চালুক্যলিপি হইতে বর্তমান তেল গু ও কণাড়ী এবং চের ও চোললিপি হইতে তামিল লিপি গঠিত হইয়াছে । দাক্ষিণাত্যের লিণিতত্ত্ব প্রণেতা ডাক্তার বুর্ণেল, দাক্ষিণাত্যের লিপিমালাকে প্রধানতঃ চারিভাগে বিভক্ত করিয়াছেন –