বর্ণলিপি অতুরীয় ( Assyria ), বাবিলোন প্রভৃতি স্থানের লিপির সহিত খরোটা লিপির সাপ্ত রক্ষিত হইয়াছে। (ভোজক ব্রাহ্মণ দেখ। ] এখন আমরা বুঝাইয়া দিতে পারি যে অরমীর শ্রেণীর মণিকলিপি হইতে খরোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে নাই। বহুলিপিবিদ্যু আইজাকৃ. টেলর তাহার “বর্ণমালা” পুস্তকে লিথিয়াছেন যে নেবুকাদনেজার ও নেরিগ্নিসারের ( ৫৬ খৃঃ পূৰ্ব্বাৰে ) ইষ্টকের উপরই অয়মীয় লিপির স্পষ্ট নিদর্শন পাওয়া যায়। কিন্তু তাহার ও পুৰ্ব্বেকার বাবিলোনীয় লিপি হইতে ধরোষ্ঠীর নিদর্শন বাহির হইয়াছে এবং তাহারও বহুপূৰ্ব্বে যে এখানে জরথুস্ত্রবংশ আধিপতা করিতেন, সে কথা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি। কেবল বাবিলোন বলিয়া নহে, অন্তস্থানেও খৃঃ পূৰ্ব ৭ম শতালীর পূৰ্ব্বে । অরমীয় লিপির পুষ্টিসাধন হয় নাই।+ প্রায় খৃঃপূৰ্ব্ব ৭ম শতাদে ফনিকদিগের রাজশক্তি ও বাণিজ্যপ্রভাবের অবসান ঘটিলে ফিনিসিয়ার আদিবর্ণমালা হইতেই উত্তর সিরীয়ায় অরমীয়লিপি গঠন লাভ করিয়াছিল। আদি ; ফনিকলিপিও দুই প্রকার দৃষ্ট হয়। তন্মধ্যে যে সৰ্ব্বপ্রাচীন লিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহ খৃষ্টপূৰ্ব্ব ১০ম শতাব্দীর শেষে । অথবা ১১শ শতাব্দীর প্রথমে উৎকীর্ণ হইয়াছিল ; প্রাচীন নিনেভে নগরীতে কালরূপা শিয়লিপির সহিত প্রাচীন ফনিকলিপি উৎকীর্ণ দেখা যায় । যাহা হউক,বেরোসাসের মত ধরিলেও আমরা দেখিতেছি যে, খৃষ্ট জন্মের দুই সহস্র বর্ষেরও পূৰ্ব্বে | জরথুস্ত্রের বংশধরগণ অস্বীয়ায় রাজত্ব করিতেছিলেন, সেই সুপ্রাচীনকালে ফনিকলিপির সন্ধানই পাওয়া যায় নাই। মিসরপতি আহমেশের চিত্রলিপিতে প্রায় ১৪৬২ খৃষ্ট পূৰ্ব্বাদে আমরা “ফেনেথ” নামে ফিনিকদিগের উল্লেখ পাই । ঐ সময়ের পূৰ্ব্বেই যে এখানে ফনিক সংশ্ৰব ঘটিয়াছিল, তাহাতে বিশেষ । সন্দেহ করিবার কারণ দেখি না। তখনও তাহাদের দ্বারা ; বিপৰ্যয় বা দক্ষিণ হইতে বামমুখী লিপির স্পষ্ট হয় নাই। এই ৷ সময়ের পত্রপটে অঙ্কিত (Papyrus) সঙ্কেতলিপিতে (Hiaratic) - যে অক্ষরের আভাস পাই, তাহার কএকট বর্ণ দাক্ষিণাত্যের সুপ্রাচীন বট্রেলেও, অক্ষরের মধ্যে পাওয়া গিয়াছে, সে কথা । পূৰ্বেই লিখিয়াছি। ভারতীয় পণিৰগণ খৃষ্ট-জন্মের বহুসহস্ৰ বৰ । পূৰ্ব্বে যে মিসর প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্য করিতে আসিত,সলোমনের ইতিহাস হইতেই তাহার আভাস পাওয়া গিয়াছে। পণিকদিগের । বেছ কেছ মিসরে আসিয়া দ্রাবিড়ীয় সভ্যতার রেখা পাত করেন । • Taylor's Alphabets, Vol. I. p. 247. + Taylor's Alphabets. Vol. I. p. 198. 1 Taylor's Alphabets, Vol. 1. p. 216 [ ৬০২ ] বর্ণলিপি ~ - এবং তাহাদের সঙ্গেই দক্ষিণাত্যের অতি প্রাচীন বট্রেলেত্ত্ব সঙ্কেতলিপির স্থান অধিকার করে। তৎপূৰ্ব্বে মিসরে কেবল চিত্রলিপিরই প্রচলন ছিল। দ্রাবিড়ীয় পণিকদিগের সহিত সঙ্কেতলিপি ইজিষ্টে প্রবেশ করিলে তাহাতেই পত্রপট (Papyrus) অঙ্কিত করিবার প্রথা চলিল। যাহারা বলেন যে, পাশ্চাত্য দেশ হইতে ফনিকগণ গিয়া দ্রাবিড়ে সেমিটক সভ্যতার বীজ প্রবর্তন করেন, তাহাদের মতের সহিত আমাদের মিল নাই। তাহ হইলে মিসরে যেমন চিত্রাক্ষর প্রচলিত, দক্ষিণাত্যেও সেইরূপ চিত্রাক্ষরের কোন প্রকার সন্ধান পাইতাম। তাহ যখন নাই, অথচ দাক্ষিণাত্যের বট্রেলেত্তর আ, ই, প্রভৃতি কোন কোন বর্ণের সহিত মিসরের সঙ্কেতলিপির মিল পাইতেছি, অথচ সেই সময়ে চিত্রাক্ষরের অসদ্ভাব ছিল না, তখন যে ভারতবাসী গ্রহণ না করিয়া তাহদের নিকট হইতেই বরং মিসরবাসী সুবিধাজনক সঙ্কেতলিপি গ্রহণ করিয়া থাকিবে, তাহ কিছু আশ্চৰ্য্যজনক নহে। এই সঙ্কেতলিপিরই ভিন্নরূপ নিদর্শন সুপ্রাচীন বাবিলোন ও অসুরীয় কীললিপিতে রহিয়াছে । কেবল মিসর বলিয় নহে, বাণিজ্য বাপদেশে ফনিকগণ জরথুস্ত্র গণের অধিকারভুক্ত রাজ্যে আসিয়া বিপৰ্য্যস্তলিপিব ব্যবহার শিক্ষা করিয়া যুরোপে গিয়া প্রচার করিয়৷ থাকিবে, এই কারণ সেই স্বপ্রাচীন গ্রীক ঐতিহাসিকগণের নিকট ফনিক্রাই লিপি মালার প্রবর্তৃক বলিয়া পরিচিত। বাস্তবিক তাহদের অভু্য দয়ের বহুপূৰ্ব্বে বিপৰ্য্যস্ত বা খরোষ্ঠীলিপির উৎপত্তি। এখন আমরা বুঝিতেছি যে, ব্রাহ্মীলিপি যেমন ভারত, ব্রহ্ম, সিংহল, ও ভারতমহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রচলিত, প্রাচীন লিপিসমূহের জননী থরোষ্ঠীও সেইরূপ সকল বিপৰ্য্যস্ত লিপির জননী । ফশিকগণ এই লিপি লইয়া গিয়া যুরোপে প্রথম প্রচার করিয়৷ ছিল বলিয়াই গ্রীকদিগের নিকট ফনিকেরাই বর্ণলিপির উদ্ভাবয়িতা বলিয়। থ্যাতিলাভ করিয়াছে । যেমন মোআবি ও সিদোনে ফনিকদিগের প্রচারিত লিপির কালবশে পরস্পরের রূপে অনেকটা পার্থক্য ঘটিয়াছিল, সেইরূপ অশোকের ব্যবহৃত খরোক্টর সহিত উক্ত লিপিসমূহের পার্থক্য দৃষ্ট হইয়া থাকে। যেমন স্থান ও , কালবশে সেবীয় ও ষোক্তানের সেমিটক লিপি : মোমাব, সিদোন ও অরমার লিপি হইতে বহুলাংশে পৃথক হইয়া পড়িয়াছে, সেইরূপ অশোকের ব্যবহৃত ধরোষ্ঠীর সহিত অপর স্থানের বিপৰ্য্যস্ত লিপিরও পার্থক্য ঘটয়াছে। টেলর, বৃহ’লর প্রভৃতি লিপিতত্ত্ববিদগণ এসিয়া মাইনর বা আরবের প্রাচীন লিপির কণিষ্ণরাজ সমতিৰাল হইতে সমিতিঞ্চ বা সেমিটিক মামের উৎপত্তি । মুক্তরাং ফশিষ্ণ ও সমিতিক একশ্ব ।
পাতা:বিশ্বকোষ সপ্তদশ খণ্ড.djvu/৬০২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।