পাতা:বিশ্বকোষ সপ্তদশ খণ্ড.djvu/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রোশেনীয় মানগণের শিক্ষার্থ দিল্লীর কাজিপাড়ার নিকটে মসজিদ নিৰ্ম্মাণ করান। উহা রোশন উদ্দৌলা মসজিদ নামে খ্যাত ও সোণার পাত দিয়া মণ্ডিত ছিল। এই বিস্তামন্দিরের ছাদে দাড়াইয়া পারস্তপতি নাদিরশাহ দিল্লীবাসীর হত্যাকাগুলাধন করিতে আদেশ দিয়াছিলেন। ১৭৩২ খৃষ্টাব্দে রোশন উদ্দৌলার স্বত্যু ঘটে। রোশন উদ্দৌলা (নবাব ), হায়দরাবাদের নিজামের ভ্রাতা,ইনি সুশিক্ষিত ও সদাচারী ছিলেন । ১৮৭ খৃঃ তাহার মৃত্যু হয় । ৯ রোশনচোকী ( পারসী ) সানাই প্রভৃতি যন্ত্ৰযোগে ঐক্যতান বাদন। নহবৎ যেমন একস্থানে পাটাতমের উপর বসাইয়া বাদিত হয়, রোশনচেী সেইরূপ বরযাত্রা বা দেবযাত্রার সম্মুখে একটী চৌকীতে বাজাইতে ৰাজাইতে গমন করে। রাজার বিশ্রামার্থ অন্তঃপুরে গমন করিলে সেই গৃহের চতুর্দিকে রোশনচৌকী বাজান হয় । রোশেনাধীদ, যাঙ্গালায় ত্রিপুরাজেলার অন্তর্গত একটা ভূসম্পত্তি। ভূপরিমাণ ৮৯ বর্গমাইল। ৫৩ট পরগণা লইয়া এই বিভাগ গঠিত। পাৰ্ব্বতাত্রিপুরার রাজা ইহার অধিকারী। ইংরাজগবর্মেন্টকে বাধিক ১৪৩৬১-২ টাকা রাজস্ব দিতে হয়। রোশেনীয়া, মুসলমানধৰ্ম্ম-সম্প্রদায়তো। বাজিদ আল্লারী নামক জনৈক মুসলমান সাধু ইহার প্রবর্তক। তিনি পীর-ইরোশান নামে আফগান সমাজে পরিচিত ছিলেন । বয়াজি কানাহার সীমান্তর্বর্তী কানিগুরম জেলার বুমুদবংশীয় আফগান জাতির মধ্যে আবদুল্লা নামক একজন বিদ্বান ও স্বধৰ্ম্মনিরত মুসলমানের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার যত্নে উপযুক্ত শিক্ষা লাভ কয়িয়া তিনি গৰ্ব্বিত হইয়৷ উঠিলেন এবং অর্থচিস্তায় অশ্বব্যবসায়ী হইয়া সমরকন্দ রাজ্যে গমন করেন। এস্থান হইতে হিন্দুস্থানে প্রত্যাবর্তনকালে কালিঞ্জরে মোল্লা সুলেমানের সহিত র্তাহার সাক্ষাৎ হয়। তখন হইতেই তাছার ধৰ্ম্মবিশ্বাস পরিবৰ্ত্তিত হইতে থাকে । পিতা পুত্রের এই অধৰ্ম্মাচরণে ক্রুদ্ধ হইয় তাহার গাত্রে অন্ত্রাঘাত করেন ও পুত্রকে ইসলামধৰ্ম্মের আদেশসমূহ পালন করিতে প্রতিশ্রুত করাইরা লন, কিন্তু তাহাতেও পুত্রের বিকৃত চিত্ত পরিবর্তিত হয় না । ক্ষতস্থান আরোগ্য হইবামাত্র তিনি জন্মভূমি পরিত্যাগ করির নিলগহর নামক স্থানে আসিয়া ধৰ্ম্মমত বিস্তারে প্রয়াস পাল । তিনি হুমায়ুন পাতশাহের পুত্ৰ মীর্জ মহম্মদ হেকিমের সমসাময়িক ছিলেন। মোগলসম্রাটু আকবর শাহেয় সমকালে ৯৪৯ হিঃ তিনি প্রাধান্তলাভ করিয়া স্বীয় ধৰ্ম্মমত স্থাপন করেন। ঐ দেীরা ইহার পূৰ্ব্বে কাবুলে স্ত্রীর্জ মহম্মদ হুেকিমের সভায় মিঞা বয়াজিদের সহিত ৰিচারে ভৎকালীন মুসলমান সাধুগণকে পরাস্ত হইতে দেখিয়াছিলেন। [ so ) রোশেনীয়া প্রবাদ, বয়াজি পাঠশালায় বর্ণবিশ্বাসও শিক্ষা করেন নাই, কিন্তু পূৰ্ব্বজন্মের স্বকৃতিগুণে দর্শনাদির মীমাংসাতখ গুহার ক%াগ্রে ছিল, তিনি কোরাণের প্রসিদ্ধ বাক্যসমূহের অতি লরল ব্যাখ্যা করিয়া সাধারণকে বুঝাইয়া দিতেন। র্তাহার প্রতিকথায় জ্ঞানগর্ত উপদেশ ধিয়াজ করিত। তিনি জাম্বুবাদ’ প্রচার করিয়া গিয়াছেন। তাহার মতে যে হিন্দু আত্মার স্বরূপ বুঝিয়াছে, সেই ব্যক্তি মুসলমান জপেক্ষ পূজ্য। যে ব্যক্তির আত্মজ্ঞান উপস্থিত হয় নাই এবং যে আত্মার অবিনখরত্ব স্বীকার করে না, সে অজ্ঞ ; সুতরাং সেই অহঙ্কারবিমূঢ় ব্যক্তির ঐশিক ঐশ্বৰ্য্যের কোন অধিকার নাই। ঐন্ধপ অজ্ঞ ও জীবন্ত ব্যক্তির বংশধরেরাও যখন মৃতবৎ আচরণ করিবে, তখন জীবিত ও জ্ঞানীরাই ঐ সম্পত্তির প্রকৃত উত্তরাধিকারী বলিয়া গণ্য হইবে। এই সংস্কারের বশবৰ্ত্তী হইয়া তিনি অনেকগুলি অজ্ঞলোকের প্রাণ সংহার করিতে আদেশ দিয়া ছিলেন এবং তিনি ও র্তাহার পুত্র চতুষ্টয় প্রথমে দমাবৃত্ত্বির দ্বারা আমীর ওমরাহ প্রভৃতি ধনাঢ্য মুসলমানগণের যথাসৰ্ব্বস্ব হরণ করিয়াছিলেন। লন্ধসম্পত্তির এক পঞ্চমাংশ তিনি একস্থানে সঞ্চয় করিয়া রাখিতেন এবং আবশুক মতে স্বীয় বিশ্বস্ত অনুচরবর্গের মধ্যে বিতরণ করিতেন । দমাবৃত্তিতে লিপ্ত থাকিলেও বয়াজিদ, বা তাহার পুত্র চতুষ্টয় কখনই ধৰ্ম্মপথভ্রষ্ট হন নাই। র্তাহারা সংযমী ও জিতেঞ্জিয় ছিলেন, কখনও কোনরূপ কুকাৰ্য্যে নিরত হন নাই। তিনি একেশ্বরোপাসনাকারীর ধনলুণ্ঠন বা তাহাকে কোনরূপ অযথা পীড়ন করিতেন না। তিনি এই সময়ে ইসলামধৰ্ম্মের ক্রিয়াকৰ্ম্মে বিশেষ আস্থাবান ছিলেন। নিত্য ৫ বার নিমাজ’ করিতেন। এমন কি, একেশ্বরে বিশ্বাসী ভিন্ন অঙ্গ কাহারও হস্তে নিহত পশুমাংশ ভোজন করিতেন না । তিনি একদিন আপনার পিতা আবদুল্লাকে বলিলেন যে, পয়গম্বর মহম্মদবণিত সরিয়াৎ রাত্রির ন্তায়, তরিকাৎ তারকার ছায়, হকিকৎ চক্রের স্থায় এবং মারিফৎ সূর্য্যের স্থায়। আত্মাকে উজ্জ্বল করিবার ' মারিফৎ ভিন্ন আর অন্ত উপায় নাই। ইসলামধৰ্ম্মের সরিয়াৎ বা পঞ্চাঙ্গ সাধন মুসলমানমাত্রেরই কর্তব্য। নিত্য ঈশ্বরের নামজপ, ভজনগান এবং তসবিয়া ও তহলীল করা মুসলমানমাত্রেরই কর্তব্য। বয়াজিদ রচিত কএকখানি উপদেশ গ্রন্থ পাওয়া যায়। উহা আরবী, পারসী, হিনী ও পেগু (আফগানী ) ভাষায় লিখিত। তাহার “মকৃগুদ-আল-মুমেশিন’ গ্রন্থ আরবী ভাষার রচিত। ঐ গ্রন্থে লিখিত অঙ্কু, পরম পিতা পরমেশ্বর মিঞানী জবরাইলের দ্বার তাহাকে ঐশ-প্রেম জ্ঞাপন করিয়াছিলেন। তাহার ‘খারত্ন-জলরিযান' নামক গ্ৰন্থখানি উপরোক্ত চামিটী