রেডিয়ম লোহ প্রভৃতির মতোই ধাতুদ্রব্য। এর পরমাণুগুলি ভারে এবং আয়তনে বড়। অবশেষে একদিন কী কারণে কেউ জানে না রেডিয়মের পরমাণু যায় ফেটে, তার অল্প একটু অংশ যায় ছুটে; এই ভাঙন-ধরা পরমাণু থেকে নিঃসৃত আলফা-রশ্মিতে যে-কণিকাগুলি প্রবাহিত হয় তারা প্রত্যেকে দুটি প্রোটন ও দুটি ন্যুট্রনের সংযোগে তৈরি। অর্থাৎ হেলিয়ম-পরমাণুর কেন্দ্রবস্তুরই সঙ্গে তারা এক। বীটা-রশ্মি কেবল ইলেকট্রনের ধারা। গামা-রশ্মিতে কণা নেই। তা আলেকজাতীয়। কেন যে এমন ভাঙচুর হয় তার কারণ আজো ধরা পড়েনি। এইটুকু অপব্যয়ের দরুন পরমাণুর বাকি অংশ আর সেই সাবেক রেডিয়মরূপে থাকে না। তার স্বভাব যায় বদলিয়ে। দুটি ইলেকট্রন আত্মসাৎ করে অলফ-কণার পরিণতি ঘটে হেলিয়ম-গ্যাসে। এই স্ফোরণ ব্যাপারকে বাইরের কিছুতে না পারে উসকিয়ে দিতে, না পারে থামাতে। চারদিকের অবস্থা ঠাণ্ডাই থাক্ আর গরমই থাক্, অন্য পরমাণুদের সঙ্গে মেলামেশাই করুক, অর্থাৎ তার বাইরের ব্যবস্থা যে রকমই হোক তার ফেটে যাওয়ার কাজটা ঘটতে থাকে ভিতরের থেকে। গড়ের উপরে রেডিয়মের আয়ু প্রায় দু-হাজার বছর, কিন্তু তার যে পরমাণু থেকে একটা আলফা-কণা ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে তার মেয়াদ প্রায় দিন চারেকের। তার পরে তার থেকে পরে পরে
পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক
৩৪