মহাভাঙন তন্ত্র
এ বড়ো ভীষণ ফরমাশ। সকলের বাড়া এই, যে গৃহস্থ রাতদিন জমিজমার ভাবনা ভেবে, তিলে তিলে পলে পলে সম্পত্তি বাড়িয়ে মুরুব্বি হয়ে উঠেছে, এখন তার এই যথাসর্বস্ব না ছাড়লে তাকে কিনা পেতে হবে সাজা।
প্রবাসীর মনের ব্যথা আমরাও বুঝি। ধনীর ধন জালিয়াতে ফাঁকতালে মেরে নিলে তাকে সশ্রম নির্বাসন-দণ্ড দেওয়া হয়, তা তো গা সওয়া হয়ে গেছে। অন্যের খাটুনির ফল ভোগ করে ধনী গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ায়, তাও দেখে দেখে আর বিসদৃশ লাগে না। কিন্তু ধনী বেচারীকে জালিয়াতের মেকদারের সাজা পেতে হবে শুনলে মনটা ছ্যাঁক করে ওঠে বইকি।
পৃথিবীর কোনো জাতকে কোনো কালে কি এত বড়ো সর্বনাশের মুখে পড়তে হয়েছে। এ কথা প্রবাসী মাথায় হাত দিয়ে বসে ভাবছেন, এমন সময় তিনি নদিয়া (Nadya) নামের একটি পরিচিত রুশমেয়ের চিঠি পেলেন—
নদিয়ার চিঠি
আমাদের দল-বল নিয়ে আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরতে চলেছি,—চাষীদের সমবায় পত্তন করতে। কাজটা সহজ নয়, কিন্তু ফলটা বিরাট। তুমি এখানে চলে এসো; যে চাষীদের প্রকৃতি তুমি অচল অটল মনে কর, তারা কেমন করে সমবায়ী হতে শিখছে, দেখবে এসো। চোখে দেখলে, ওদের দুঃখ কল্পনা করে তোমায় আর দুঃখ পেতে হবে না, তোমার নিজেরও চিত্তশোধন হবে। তুমি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলে—প্রাণ যাবে তবু চাষায় বাস্তু ছাড়বে না; সেই একগুঁয়ে চাষীকে আমরা কেমন করে পথে আনছি, দেখে যাও। শুধু দেখেই বা ক্ষান্ত হবে কেন।
১০৫