পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পালান্ত পরিচ্ছেদ

“তোমাদের” আনন্দ বাড়াবার ব্যবস্থা করা,— অন্য লোকে কবে কী করেছে তাই পড়েশুনে নকল করে বাসী ভাবে নয়; নিজের বুদ্ধিবৃত্তি টাটকা খাটিয়ে —বুদ্ধি দিয়ে ভেবে, হৃদয় দিয়ে অনুভব করে, কাজে আগ্রহ করে। নিজের সত্ত্বার এমন টলটলে অবস্থা করে তোলো যে যেমন মনে বোঝা, অমনি বুকে দরদ, তৎক্ষণাৎ চেষ্টায় হাত।

 টাটকা কাজ করাই সৃষ্টি করা। শরীরমন যদি পরিষ্কার রাখ, চিত্ত যদি শুদ্ধ রাখ, তাহলে সেগুলি তোমার নিজের তৈরি জিনিস হয়ে উঠবে। আত্মীয়বন্ধুর সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক যা আছে তা আছে, নিজের সুভাব দিয়ে যেটিকে আরো মিষ্টি করে তুলতে পারবে সেটি তোমার হাতেগড়া সম্বন্ধ হবে। যেখানে সম্পর্ক থাকার কোনো লৌকিক কারণ নেই, সেখানে সুখদু:খের ভাগী হয়ে সম্বন্ধ পাতিয়ে বসা যায়। কাজে ব্যবহারে কথায় কথায় নিত্যি নতুন সৌন্দর্য সৃষ্টি করা যায়। নিজের মনহৃদয়ের রস দিয়ে জীবনের প্রত্যেক ক্রিয়াকে উৎসব, প্রত্যেক উৎসবকে আনন্দময় করে তোলা যায়। একবার সৃষ্টি করব ব’লে বসলে দেখবে এমন ঘটনা নেই যাকে নিজের ছোঁয়া দিয়ে আপনার না করে নেওয়া যায়। এই সৃষ্টি কাজেই মানুষ মানুষের উপযুক্ত আনন্দ পেতে পারে। এ সৃষ্টি রোজই করা যায়, এবেলা, ওবেলা করা যায়, উঠতে বসতে করা যায়; এর জন্যে আলাদা সময় তুলে রাখার আবশ্যক করে না,— প্রতি মুহূর্তেই করা যায়। যে মুহূর্ত কে আনন্দময় করে তুলতে পারবে, তাতেই অনন্তের আস্বাদ পাবে।

 জিজ্ঞেস করতে পার, যে প্রেমের প্রেরণ সৃষ্টি করায় সে প্রেম পাওয়া যাবে কেমন করে। যিশু বলেছেন ঘা দিলে দরজা খুলে যায়। পতঞ্জলী বলেছেন যত আবেগে চাবে তত বেগে পাবে। তার সোজা মানে, চাওয়া আর পাওয়া একই কথা। প্রেমের আলো সকলের মধ্যে

১৮৮