দুৰ্গতিনাশন যজ্ঞারম্ভ জমিদারবাড়ি-জালানো আরম্ভ করলে। তখন সদর থেকে পলটন এলে গুলি চালিয়ে সব ঠাণ্ড করে দিলে। শহরে কি অবস্থাপন্ন দয়ালু লোক কেউ ছিল না ?—ছিল বৈ কি। দুর্তিক্ষে কি সকলের লোকসান। ভেজাল-দেওয়া জিনিস চড়া-দামে বেচে কারে বড়ো বাড়ি হয়, কারো নগদ টাকা জমে। তখন দয়া করারও ফুরসত আসে। থিয়েটার-রে, কনসার্ট-রে, কতরকমের আমোদপ্রমোদের আয়োজন করে গ্রামবাসীদের জন্তে টাকা তোলা হল ; উচ্ছিষ্ট দিয়ে সুরুয়া তৈরি করে শহরের পাড়ায় পাড়ায় কাঙালী বিদায়ের ধুম লেগে গেল। কিন্তু তাও বলতে হয়, হাজার বদাম্ভ হলেও লোকে কি দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ধৈর্য রাখতে পেরে ওঠে ? খেতে পাই না, খেতে পাই না, ঐ একঘেয়ে চীৎকার শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা, মনে ঘাট পড়ে যায়। তবুও সেই খাই খাই, রোজই খাই থাই, অবুঝ প্রজাগুলো সামান্ত খাওয়াটা বঁচোটার জছে কি খ্যাপানটাই খেপেছিল। দুৰ্গতিনাশন যজ্ঞারম্ভ মনে হতে পারে বোবা সাক্ষীর জবানবন্দি হয়ই না । কিন্তু রুশের প্রজাকে পেয়াদায় নীরবে যা সওয়াল, তার বিবরণ নারায়ণের নথির মধ্যে ঠিক উঠে গেল। তবে কি না, তিনি শেষ নাগের নরম পিঠের উপর দিব্যি হেলান দিয়ে বোধ করি একটু ঝিমিয়ে পড়েছিলেন, তাই সে সব কথা বিচার আমলে আসতে কত দিন যে লেগে গেল তার ঠিকানা নেই। কি নরের, কিবা নারায়ণের, আদালত দেখি সব এক ছাচে ঢালা, তাদের গড়িমসি চালের আর শেষ পাওয়া যায় না। ২১
পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।