মনপ্রাণের উৎকর্ষ
নিয়মে চলে, কিন্তু পরমেশ্বরকে সত্যিই তো তার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না। আলাদা প্রবাহের চালকও যেন আলাদা,—সব সময় তাদের এক মতি থাকে না, অন্তত তাদের-চালানো প্রবাহগুলির এক গতি ঘটে না, বিরোধ বাধে, একের গড়া অন্যে ভাঙে।
প্রকৃতির অম্বিকা-মূর্তির যে সামঞ্জস্য—যাকে বিজ্ঞানীরা ব্যাল্যান্স অব নেচার (Balance of Nature) বলেন—তার বাইরের পরিপাটী ঠাট শান্তির ছবি, অথচ তার তলে তলে করালীর রণরঙ্গ; বাঁচার জায়গা, বাঁচার সুযোগ, বাঁচার উপায় নিয়ে ছোটো বড়ো প্রাণীদলের হরদম ভীষণ রেষারেষি চলেছে; গোছগাছ নেই তা নয়, কিন্তু ফেলাছড়াও বিস্তর। পরস্পর সাহায্যের মাধুর্য, নিষ্ঠুর খাওয়াখাওয়ির কদর্যতা পাশাপাশি পাওয়া যায়।
এই অবস্থার কথা ভাবলে, “যা করেন ভগবান,” এই বাঁধি বুলিতে সায় দিতে মন সরে না। ভগবান গর্তে ফেলেন আবার সেই গর্ত থেকে তোলেন; বাঘ দিয়ে মানুষ খাওয়ান, মানুষের বন্দুকে বাঘ মারান; যাকে দুষ্ট বুদ্ধি জোগান তাকেই দুষ্ট কাজের সাজা দেন,—এ ভাবে কথা কইলে কোনো তত্ত্বের সন্ধান তো মেলেই না, মাঝে থেকে ভগবান নামের গাম্ভীর্য নষ্ট হয়।
জড়ের বাধাবিঘ্নের মধ্যে দিয়ে প্রজ্ঞাশক্তি, নিজের ক্রমবিকাশের পথ খুঁজে ফিরছে, ভুল পথে বার বার কিছুদূর চলে আবার পালটে নতুন পথ ধরতে হচ্ছে,—চেহারাটা সেইরকম লাগে। কোথায় যাবার পথ? বহু থেকে আবার একে পৌঁছবার নাকি? এই চেষ্টাই যেন প্রকৃতির লীলা।
মাঝপথে নানা খণ্ড-ঈশার আঁকুবাঁকু দেখে পরম মহেশ্বরের চরম অভিপ্রায় সম্বন্ধে কোনো তত্ত্ব সাব্যস্ত করে বসার ঝোঁক চাপলে, সারধান
৯০