সপ্তচারিংশত্তম পরিচ্ছেদ ; সরল এবং সপী }ళ్సీ তাচ্ছল্য প্রাপ্ত হইয়া থাকে, তবে সেই এই রোদনের মৰ্ম্মচ্ছেদকতা অনুভব করি। डेन কুন্দ পরিতাপ করিতে লাগিল যে, “কেন আমি স্বামিদর্শনলালসায় প্রাণ রাখিয়ছিলাম।” আরও ভাবিল যে, “এখন আর কোন মুখের আশায় প্রাণ রাখি ” সমস্ত রাত্রি জাগরণ এবং রোদনের পর প্রভাতকালে কুন্দের তন্ত্র আসিল। কুন্দ তন্দ্রাভিভূত হইয়া দ্বিতীয় বার লোমহর্ষণ স্বপ্ন দেখিল। দেখিল, চ’রি বৎসর পূৰ্ব্বে পিতৃভবনে পিতার মৃত্যুশয্যাপার্শ্বে শয়নকালে, যে জ্যোতিৰ্ম্ময়ী মূৰ্ত্তি তাহার মাতার রূপধারণ করিয়া, স্বপ্নাবিভূত হইয়াছিলেন, এক্ষণে সেই আলোকময়ী প্রশান্তমূৰ্ত্তি আবার কুন্দের মস্তকোপরি অবস্থান করিতেছেন। কিন্তু এবার তিনি বিশুদ্ধ শুভ্র, চন্দ্রমণ্ডলমধ্যবৰ্ত্তিনী নহেন। এক অতি নিবিড় বর্ষণোন্মুখ নীল নীরদমধ্যে আরোহণ করিয়া অবতরণ করিতেছেন। র্তাহার চতুষ্পার্শে অন্ধকারময় কৃষ্ণবাম্পের তরঙ্গোৎক্ষিপ্ত হইতেছে, সেই অন্ধকার মধ্যে এক মনুষ্যমূৰ্ত্তি অল্প অল্প হাসিতেছে। তন্মধ্যে ক্ষণে ক্ষণে সৌদামিনী প্রভাসিত হইতেছে। কুন্দ সভয়ে দেখিল যে, ঐ হাস্যনিরত বদনমণ্ডল, হীরার মুখামুরূপ। আরও দেখিল, মাতার করুণাময়ী কান্তি এক্ষণে গম্ভীরভাবাপন্ন। মাতা কহিলেন, “কুন্দ, তখন আমার কথা শুনিলে না, আমার সঙ্গে আসিলে না—এখন হুঃখ দেখিলে ত ?” কুন্দ রোদন করিল। তখন মাতা পুনরপি কহিলেন, “বলিয়াছিলাম আর একবার আসিব ; তাই আবার আসিলাম। এখন যদি সংসারমুখে পরিতৃপ্তি জন্মিয় থাকে, তবে আমার সঙ্গে চল ।” তখন কুন্দ কাদিয়া কহিল, “ম, তুমি আমাকে সঙ্গে লইয়া চল । আমি আর এখানে থাকিতে চাহি না ।” ইহা শুনিয়া মাত প্রসন্ন হইয়া বলিলেন, “তবে আইস।” এই বলিয়া তেজোময়ী অস্তৰ্হিত হইলেন। নিদ্রা ভঙ্গ হইলে, কুন্দ স্বপ্ন স্মরণ করিয়া দেবতার নিকট ভিক্ষ চাহিল যে, “এবার আমার স্বপ্ন সফল হউক ৷” 發 প্রাতঃকালে হীরা কুন্দের পরিচর্য্যার্থে সেই গৃহে প্রবেশ করিল। দেখিল, কুন্দ কাদিতেছে। কমলমণির আসা অবধি হীরা কুন্দের নিকট বিনীতভাব ধারণ করিয়াছিল। নগেন্দ্র আসিতেছেন, এই সংবাদই ইহার কারণ। পূৰ্ব্বপরুষব্যবহারের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ বরং হীরা,
পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৪৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।