একবিংশ পরিচ্ছেদ : হীরার কলহ—বিষবৃক্ষের মুকুল \సి হী। আমার জবাব হয়েছে। মা ঠাকুরাণী অামাকে জবাব দিয়াছেন। ন । কি করেছিস্ তুই ? ...” হী। কুশি আমাকে গালি দিয়াছিল—আমি নালিশ করিয়াছিলাম। তিনি তীয় কথায় বিশ্বাস করিয়া অামাকে জবাব দিলেন । - নগেন্দ্র মাথা নাড়িয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “সে কাজের কথা নয়, হীয়ে, আসল কথা কি বল ।” হীরা তখন ঋজু হইয়া বলিল, “আসল কথা, আমি থাকিব না।” ন। কেন ? হী। মা ঠাকুরাণীর মুখ বড় এলো মেলো হয়েছে—কারে কখন কি বলেন, ঠিক নাই । নগেন্দ্র ভ্ৰকুঞ্চিত করিয়া তীব্রস্বরে বলিলেন, “সে কি ?” হীরা যাহা বলিতে আসিয়াছিল, তাহ। এইবার বলিল, “সেদিন কুন্দঠাকুরাণীকে কি না বলিয়াছিলেন। শুনিয়া কুন্দঠাকুরাণী দেশত্যাগী হয়েছেন। আমাদের ভয়, পাছে ' আমাদের সেইরূপ কোন দিন কি বলেন,—আমরা তা হলে বাচিব না। তাই আগে হইতে সরিতেছি ।” ন। সে কি কথা ? হী। আপনার সাক্ষাতে লজ্জায় তা আমি বলিতে পারি না । শুনিয়া, নগেন্দ্রের ললাট অন্ধকার হইল। তিনি ইরাকে বলিলেন, “আজ বাড়ী যা ! কাল ডাকাব।” হীরার মনস্কাম সিদ্ধ হইল। সে এই জন্ত কৌশল্যার সঙ্গে বচস। স্বজন করিয়াছিল। নগেন্দ্র উঠিয়া সূর্যমুখীর নিকটে গেলেন। হীরা পা টিপিয়া টিপিয়া পশ্চাৎ পশ্চাৎ গেল । সূৰ্য্যমুখীকে নিভৃতে লইয়। গিয়া নগেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কি হীরাকে বিদায় দিয়াছ " সূৰ্য্যমুখী বলিলেন, “দিয়াছি।” অনন্তর হীরা ও কৌশল্যার বৃত্তান্ত সবিশেষ বিবৃত করিলেন। শুনিয়া নগেন্দ্র বলিলেন, “মরুক। তুমি কুন্দনন্দিনীকে কি বলিয়াছিলে ?” নগেন্দ্র দেখিলেন, সূৰ্য্যমুখীর মুখ শুকাইল। সূৰ্য্যমুখী অক্ষুটস্বরে বলিলেন, “কি বলিয়াছিলাম ?”
পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।