পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ : খোস্ খবর brද් কম। আজি মন্ত্রিমশাইকে ডিক্ষার্জ করিব। ঘটে এ বুদ্ধিটুকুও নাই ? মেয়েমানুষে কি এমন তামাস মুখে আনিতে পারে ? ীিশ । তবে যা তামাসা কোরে পারে না, তা সত্য সত্য পারে ? কম। প্রাণের দায়ে পারে। আমার বোধ হয়, এ সত্য। ঐশ। সে কি। সত্য, সত্য ? কম । মিথ্যা বলি ত কমলমণির মাথা খাই । শ্ৰীশচন্দ্র কমলের গাল টিপিয়া দিলেন। কমল বলিলেন, “আচ্ছা, মিথ্যা বলি ও কমলমণির সতীনের মাথা খাই ।” শ্রীশ । তা হলে কেবল উপবাস করিতে হইবে। কম। ভাল, কারু মাথা নাই খেলেম—এখন বিধাতা বুঝি সূৰ্য্যমুখীর মাথা খায়। দাদা বুঝি জোর করে বিয়ে করতেছে ? শ্ৰীশচন্দ্র বিমন হইলেন। বলিলেন, “আমি কিছু বুঝিতে পারিতেছি না। নগেন্দ্রকে পত্র লিখিব ! কি বল ?” কমলমণি ভtহাতে সম্মত হইলেন। শ্রীশচন্দ্র ব্যঙ্গ করিয়৷ পত্র লিখিলেন। নগেন্দ্র প্রত্যুত্তরে যাহা লিখিলেন, তাহা এই – “ভাই ! আমাকে ঘৃণা করিও না—অথবা সে ভিক্ষাতেই বা কাজ কি ? ঘূণাস্পদকে অবশ্ব ঘৃণা করিবে । আমি এ বিবাহ করিব। যদি পৃথিবীর সকলে আমাকে ত্যাগ করে, তথাপি আমি বিবাহ করিব। মংে আমি উন্মাদগ্ৰস্ত হইব—তাহার বড় বাকীও নাই। “এ কথা বলার পর আর বোধ হয় কিছু বলিবার আবশুক করে না। তোমরাও বোধ হয় ইহার পর আমাকে নিবৃত্ত করিবার জন্য কোন কথা বলিবে না। যদি বল, তবে আমিও তর্ক করিতে প্রস্তুত আছি। “যদি কেহ বলে যে, বিধবাবিবাহ হিন্দুধৰ্ম্মবিরুদ্ধ, তাহাকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রবন্ধ পড়িতে দিই। যেখানে তাদৃশ শাস্ত্রবিশারদ মহামহোপাধ্যায় বলেন যে, বিধবাবিবাহ শাস্ত্রসম্মত, তখন কে ইহা অশাস্ত্র বলিরে? আর যদি বল, শাস্ত্রসম্মত হইলেও ইহা সমাজসম্মত নহে, আমি এ বিবাহ করিলে সমাজচ্যুত হইব ; তাহার উত্তর, এ গোবিন্দপুরে আমাকে সমাজচ্যুত করে কার সাধ্য ! যেখানে আমিই সমাজ, সেখানে আমার আবার সমাজচ্যুতি কি ? তথাপি আমি তোমাদিগের মনোরক্ষার্থে এ বিবাহ গোপনে রাখিব— আপাততঃ কেহ জানিবে না।
পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।