ఫిe বিষবৃক্ষ উপর কি রাগ হয় ? তাহার উপর যে অচলা ভক্তি, তাহাই রহিল, যত দিন না মাটিতে এ মাটি মিশে তত দিন থাকিবে। কেন না, তাহার সহস্র গুণ আমি কখন ভুলিতে পারিব না। এত গুণ কাহারও নাই। এত গুণ কাহারও নাই বলিয়াই আমি তাহার দাসী । এক দোষে যদি তাহার সহস্র গুণ ভুলিতে পারিতাম, তবে আমি তাহার দাসী হইবার যোগ্য নহি । তাহার নিকট আমি জন্মের মত বিদায় লইলাম। জন্মের মত স্বামীর কাছে বিদায় লইলাম, ইহাতেই জানিতে পারিবে যে, আমি কত দুঃখে সৰ্ব্বত্যাগিনী হইতেছি। “তোমার কাছে জন্মের মত বিদায় হইলাম, আশীৰ্ব্বাদ করি, তোমার স্বামী পুত্র দীর্ঘজীবী হউক, তুমি চিরমুখী হও । আরও আশীৰ্ব্বাদ করি যে, যে দিন তুমি স্বামীর প্রেমে বঞ্চিত হইবে, সেই দিন যেন তোমার আয়ুঃশেষ হয়। আমায় এ আশীৰ্ব্বাদ কেহ করে নাই ।” উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ বিষবৃক্ষ কি ? যে বিষবৃক্ষের বীজ বপন হইতে ফলোৎপত্তি এবং ফলভোগ পর্য্যন্ত ব্যাখ্যানে আমরা প্রবৃত্ত হইয়াছি, তাহা সকলেরই গৃহপ্রাঙ্গণে রোপিত আছে। রিপুর প্রাবল্য ইহার বীজ ; ঘটনাধীনে তাহা সকল ক্ষেত্রে উপ্ত হইয়া থাকে। কেহই এমন মনুষ্য মই যে, র্তাহার চিত্ত রাগদ্বেষকামক্রোধাদির অস্পৃশ্য। জ্ঞানী ব্যক্তিরাও ঘটনাধীনে সেই সকল রিপুকর্তৃক বিচলিত হইয়া থাকেন। কিন্তু মমুন্যে ময়ূন্যে প্রভেদ এই যে, কেহ আপন উচ্ছলিত মনোবৃত্তি সকল সংযত করিতে পারেন এবং সংযত করিয়া থাকেন, সেই ব্যক্তি মহাত্মা ; কেহ বা আপন চিত্ত সংযত করে না, তাহারই জন্য বিক্ষবৃক্ষের বীজ উপ্ত হয়। চিত্তসংযমের অভাবই ইহার অঙ্কুর, তাহাতেই এ বৃক্ষের বৃদ্ধি। এই বৃক্ষ মহাতেজস্ব ; একবার ইহার পুষ্টি হইলে, আর নাশ নাই। এবং ইহার শোভা অতিশয় নয়নপ্রীতিকর ; দূর হইতে ইহার বিবিধবৰ্ণ পল্লব ও সমুৎফুল্ল মুকুলদাম দেখিতে অতি রমণীয়। কিন্তু ইহার ফল বিষময় ; যে খায়, সেই মরে । - ক্ষেত্রভেদে, বিষবৃক্ষে নানা ফল ফলে। পারবিশেষে, বিষবৃক্ষে রোগশোকাদি । নানাবিধ ফল। চিত্তসংযমপক্ষে প্রথমত: চিত্তসংযমে প্রবৃত্তি, দ্বিতীয়ত: চিত্তসংযমের শক্তি
পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।