পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারোগার দপ্তর, ১৪০ সংখ্যা।

আবদ্ধ রহিল, সেই সময় যে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল, তাহাকেই সে উত্তর প্রদান করিল যে, সে কিছুই অবগত নহে, পুলিস তাহাকে ধরিয়া নিরর্থক কষ্ট প্রদান করিতেছে, তাহার বাড়ীর নিকট রসিক বাস করিত বলিয়াই তাহাকে এইরূপ অবমাননা সহ্য করিতে হইতেছে। “তিনি যদি নিরর্থক ধৃত হইয়া থাকেন, তাহা হইলে নিজে থানায় গিয়া তাহার আত্মসমর্পণ করিবার প্রয়োজন কি ছিল, ও কেনই বা তিনি স্বীকার করিয়াছিলেন যে, তাহার চপেটাঘাতে রসিক ইহজীবন পরিত্যাগ করিয়াছে।” একথা যিনি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তাঁহাকেই রাজচন্দ্র দাস পরিশেষে এই উত্তর প্রদান করিলেন যে, তিনি কোন থানায় গিয়া কাহারও নিকট আত্মসমর্পণ করেন নাই বা কাহার নিকট স্বীকার করেন নাই যে, তাঁহারই চপেটাঘাতে রসিক ইহজীবন পরিত্যাগ করিয়াছে। রাজচন্দ্রের নিকট হইতে এইরূপ উত্তর পাইবার পর তাহাকে আর কেহই কোন কথা জিজ্ঞাসা করিলেন না কিন্তু তাহার বিপক্ষে যতদূর সম্ভব অনুসন্ধান চলিতে লাগিল। এইরূপে প্রায় পনের দিবস অনুসন্ধানের পর যখন দেখা গেল যে, রাজচন্দ্রের বিরুদ্ধে আর কোন প্রমাণই সংগ্রহ হইল না, তখন অনন্যোপায় হইয়া রাজচন্দ্রকে ছাড়িয়া দিতে হইল। তিনি জামিনে নিষ্কৃতি লাভ করিয়া আপন বাড়ীতে গমন করিলেন। রাজচন্দ্রকে জামিনে ছাড়িয়া দিবার পর যে ঐ অনুসন্ধান একবারে বন্ধ হইয়া গেল, তাহা নহে; তাহার বিপক্ষে, ও কিরূপে ও কাহার হস্তে রসিক হত হইয়াছে, সেই সম্বন্ধে আরও দুইমাস কাল অনুসন্ধান চলিতে লাগিল, কিন্তু কোনরূপ ফলই ফলিল না। প্রায় তিন মাসকাল অনুসন্ধানের পর ঐ অনুসন্ধান বন্ধ হইয়া গেল।