আছে?” এব্নে আব্বাসের অলক্ষিতে পাপিষ্ঠ অনেকক্ষণ তাহাদের দিকে চাহিয়া রহিল। কিন্তু কোনক্রমেই,—কোন সময়েই বর্শা নিক্ষেপের সুযোগ পাইল না।
মন্দিরের দুই পার্শ্বে সে কয়েকবার বর্শাহস্তে ঘুরিয়া আসিল, কিন্তু একবারও লোকশূন্য দেখিল না। বৃদ্ধ পুনরায় মৃদুস্বরে বলিতে লাগিল “কি শ্রম! উপাসনার সময় ত আরও অধিক লোকের সমাগম হইবে। এমামই সকলের অগ্রে থাকিবে। বর্শার আঘাত করলেই শত্রু শেষ হইবে। এক্ষণে হাসান যে ভাবে বসিয়া আছে, পৃষ্ঠে আঘাত করিলে বক্ষঃস্থল পার হইবে সন্দেহ নাই, কিন্তু এব্নে আব্বাস্ আমাকে কখনই ছাড়িবে না। সে যে রকম চতুর, নিশ্চয়ই তাহার হাতে আমার প্রাণ যাইবে। আব্বাস বড়ই চতুর! এই ত হাসানের সহিত কথা কহিতেছে, কিন্তু তাহার দৃষ্টি চতুর্দ্দিকেই আছে। কি করি, কতক্ষণ অপেক্ষা করিব, সুযোগ সময়ই বা কত খুঁজিব? বর্শার পশ্চাদ্ভাগ ধরিয়া সজোরে হাসানকে বিদ্ধ করিলে ত কথাই নাই, দূর হইতে তাহার পৃষ্ঠসন্ধানে নিক্ষেপ করিলেও যে উদ্দেশ্য একেবারে ব্যর্থ হইবে, ইহাই বা কে বলে?”
বৃদ্ধ মনে মনে এইরূপ স্থির করিয়া হাসানের পৃষ্ঠদেশে আঘাত করিতেই বর্শাসন্ধান করিল। এব্নে আব্বাসের চক্ষু-চারিদিকে। তিনি এক স্থানে বসিয়া কথা কহিতেন, অথচ মনে, চক্ষে চারিদিকে সন্ধান রাখিতে পারিতেন। হঠাৎ আগন্তুক-বৃদ্ধের বর্শাসন্ধান তাহার চক্ষে পড়িল। তিনি হাসানের হস্ত ধরিয়া তাঁহাকে টানিয়া উঠাইলেন এবং ধূর্ত্তের উদ্দেশে উচ্চকণ্ঠে বলিতে লাগিলেন, “ওরে পিশাচ! তোর এই কীর্ত্তি!”
এদিকে বর্শাও আসিয়া পড়িয়াছে। নিক্ষেপকারীর সন্ধান ব্যর্থ হইবার নহে। বর্শানিক্ষেপে সেই ব্যক্তি সবিশেষ শিক্ষিত ও সিদ্ধহস্ত; কেবল এব্নে আব্বাসের সতর্কতা কৌশলেই হাসান পরিত্রাণ পাইলেন!— বর্শাটা তাঁহার পৃষ্ঠে না লাগিয়া পদতলে বিদ্ধ হইল। এব্নে আব্বাস্ কি করেন, —দুরাত্মাকে ধরিতে যান, কি এদিকে আঘাতিত হাসানকে ধরেন! এমাম হাসান বর্শার আঘাতে ভূতলে পড়িয়া গেলেন, এব্নে আব্বাস্ সেদিকে লক্ষ্য না