“সাধ্য নাই কি কথা? সুযোগ পাইলে আমিই মিশাইয়া দিতাম। খাদ্যসামগ্রীর সহিত মিশাইতে পারিব না, তাহা আমি বুঝিয়াছি, অন্য আর একটি উপায় আছে।”
“কি উপায়?”
“ঐ সোরাহীর জলে।”
“কি প্রকারে?—সেই সোরাহী যে প্রকারে শীলমোহর-বাঁধা, তাহা খুলিতে সাধ্য কার?”
“খুলিতে হইবে কেন? সোরাহীর উপরে যে কাপড় বাঁধা আছে, ঐ কাপড়ের উপরে এই গুঁড়া অতি অল্প পরিমাণে ঘসিয়া দিলেই আর কথা নাই। যেমন সোরাহী তেমনি থাকিবে; যেমন শীলমোহর, তেমনি থাকিবে, পানির রং বদল হইবে না, কেহ কোন প্রকারে সন্দেহ করিতে পারিবে না।”
“তাহা যেন পারিবে না, কিন্তু ঘরের মধ্যে যাওয়া ত চাই? যদি কেহ দেখে?”
“দেখিলেই বা। ঘরের মধ্যে যাওয়া ত আর দোষের কথা নয়! তুমি কেন গেলে, এ কথা জিজ্ঞাসা করিবার কাহারও অধিকার নাই। যদি ঘরের মধ্যে যাইতে কোন বাধা না থাকে, তবে দেখিবে সুযোগ আছে কি না। যদি সুযোগ পাও, সোরাহীর কাপড়ের উপরে ইহা ঘসিয়া দিও। এইমাত্র আসিয়াছ, এখন যাওয়ার আবশ্যকতা নাই। সন্ধ্য উত্তীর্ণ হউক, রোগীও নিদ্রাবশে শয়ন করুক। যাহারা সেবা-শুশ্রূষা করিতেছে, তাহারাও বিশ্রামের অবসর পাক। একটু রাত্রি হইলেই যাওয়া ভাল।”
মায়মুনা তখন জাএদার গৃহেই থাকিল। জাএদা গোপনে সন্ধান লইতে লাগিলেন। হাসানের নিকট কে কে রহিয়াছে, কে কে যাইতেছে, কে কে আসিতেছে, কে কি করিতেছে, প্রতি মুহূর্ত্তেই জাএদা গুপ্তভাবে যাইয়া তাহার অনুসন্ধান করিতেছেন। সন্ধান ও পরামর্শ করিতে করিতে অনেক সময় উত্তীর্ণ হইল। জাএদা আজ অত্যন্ত অস্থির। একবার আপন ঘরে মায়মুনার নিকটে, আবার বাহিরে! আবার সামান্য কার্য্যের ছল করিয়া হোসেনের