“আমি পুরস্কার চাই না। আমার লক্ষ লক্ষ বা লক্ষাধিক লক্ষ মুল্যের তিনটি মস্তক তোমাকে দিয়াছি ভাই! তবুও তুমি এখান হইতে যাইবে না?”
“ওরে পিশাচ! টাকার লোভ কে সম্বরণ করিতে পারে? হোহাসেনের শির তুই কি জন্য রাখিয়াছিস্? তোর সকলই কপটতা, শীঘ্ন হোসেনের মস্তক আনিয়া দে।”
“আমি হোসেনের মস্তক তোমাকে দিব না। একটি মস্তকের পরিবর্তে তিনটি দিয়াছি, আর দিব না,—তুমি চলিয়া যাও।”
সীমার ক্রোধে অস্থির হইয়া বলিল, “তুই মনে করিস্ না যে, হোসেন-মস্তক মহারাজ এজিদের নিকট লইয়া যাইয়া পুরস্কার লাভ করবি, এই যা—একেবারে দামেস্কে চলিয়া যা!” সীমার সজোরে আজয়ের বক্ষে বর্শাঘাত করিয়া তাহাকে ভূতলশায়ী করিল এবং বীরদর্পে আজরের শয়নগৃহের দ্বারে যাইয়া দেখিল,সুবর্ণ পাত্রোপরি হোসেনের মস্তক স্থাপিত রহিয়াছে, আজরের স্ত্রী খড়গহস্তে তাহা রক্ষা করিতেছেন। সীমার এক লক্ষ গৃহাভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়া হোসেনের মস্তক পূর্ব্ববৎ বর্শাবিদ্ধ করিয়া আজরের স্ত্রীকে বলিল, “তোকে মারিব না, ভয় নাই।”
আজরের স্ত্রী বলিলেন, “আমার আবার ভয় কি? যাহা হইবার হইয়া গেল! এই পবিত্র মস্তক রক্ষার জন্য আজ সর্বহারা হইলাম—আর ভয় কি? মনের আশা পূর্ণ হইল না—হোসেনের শির কারবালায় লইয়া যাইয়া সৎকার করিতে পারিলাম না, ইহাই দুঃখ। তোমাকে আমার কিছুই ভয় নাই। আমাকে তুমি কি অভয় দান করিবে?”
“কি অভয় দান করিব? তোকে রাখিলে রাখিতে পারি, মারিলে এখনই মারিয়া ফেলিতে পারি।”
“আমার কি জীবন আছে? আমি ত মরিয়াই আছি। তোমার অনুগ্রহ চাহি না।”
“কি! তুই অনুগ্রহ চাহিস্ না? সীমারের অনুগ্রহ চাহিস্ না? ওরে পাপীয়সি! তুই স্বচক্ষেই ত দেখলি, তোর স্বামীকে কি