চাহিতে চাহিতে অলীদ শিবিরাভিমুখে মহাবেগে প্রস্থান করিল। সে এখন কাক্কার হস্ত হইতে প্রাণ বাঁচাইবার উপায় খুঁজিতে লাগিল। আর কি করিবে? শেষ পন্থা—পলায়ন।
মস্হাব কাক্কা বীরদর্পে বলিতে লাগিলেন, “আয় রে কাফেরগণ! আয়, মদিনার পথে বাধা দিতে আয়। এই মস হাব চলিল।”
মস্হাব সমুদয় সৈন্য লইয়া অলীদ-শিবির পশ্চাতে রাখিয়া যাইতে লাগিলেন। কার সাধ্য মস্হাবকে বাধা দেয়? কে সেই বীরকেশরীর সম্মুখে আসিয়া দাঁড়ায়?
গাজী রহ্মান বলিলেন, “আজ মদিনায় প্রবেশ করিব না, এই যুদ্ধক্ষেত্রের প্রান্তঃসীমাতেই থাকিব। সৈন্যগণ মহাক্লান্ত হইয়াছে। আরও কথা আছে, মদিনা প্রবেশের পূর্ব্বে আমাদের কতক সৈন্য নগরের বহির্ভাগে, নগর-প্রবেশদ্বারে সর্ব্বদা সজ্জিভাবে অবস্থিতি করিবে। দামেস্কের মন্ত্রী, সৈন্যাধ্যক্ষ, কাহাকেও বিশ্বাস করিতে নাই। ছল, চাতুরি, অধর্ম্ম, প্রবঞ্চনা, প্রতারণা তাহাদের আয়ত্তাধীন— জাতিগত স্বভাব।”
মস্হাব কাক্কা সম্মত হইলেন, মোহাম্মদ হানিফাও গাজি রহ্মানের কথা গ্রাহ্য করিলেন। সৈন্যগণ অলীদের শিবির লুটপাট করিয়া, খাদ্যসামগ্রী অস্ত্র-শস্ত্র যাহা পাইল লইয়া, ‘জয় জয়’ রবে প্রান্তর কাঁপাইয়া বীরনাদে পদবিক্ষেপ করিতে করিতে চলিল।
মস্হাব কাক্কা মোহাম্মদ হানিফাকে বলিলেন, “হজরত! আর একটি কথা। তুরস্ক ও তোগান রাজ্যের ভূপতিদ্বয় আমার সঙ্গে আছেন, তাঁহারা পথে সীমার-হস্তে যেরূপ বিধ্বস্ত, বিপদগ্রস্ত হইয়াছিলেন, তাহার বিস্তারিত বিবরণ পরে বলিব। এক্ষণে একটি শুভ-সংবাদ অগ্রে না দিয়া আমি কি থাকিতে পারিতেছি না। সেই পাপাত্মা সীমারকে আমি বন্দী করিয়া আনিয়াছি।”
হানিফার মনের আগুন জ্বলিয়া উঠিল—নির্ব্বাপিত আগুন দ্বিগুণ বেগে জ্বলিয়া উঠিল— কারবালার কথা মনে পড়ল। হুহু শব্দে তিনি কাঁদিয়া উঠিলেন, মস্হাব অপ্রতিভ হইলেন। কিছুক্ষণ পরে হানিফা মস্হাবের হস্ত ধরিয়া