পাতা:বিষাদ-সিন্ধু - মীর মোশার্‌রফ হোসেন.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষাদ-সিন্ধু
৩৮৬

সজ্জিত সৈন্য দ্বারা পরিবেষ্টিত হইবে। এক শ্রেণীতে চক্রাকারে ঐ স্থান বেষ্টন করিলে শঙ্কা দূর হইবে না। সপ্তচক্র সৈন্য দ্বারা ঐস্থান বেষ্টন করিতে হইবে। চতুর্দ্দিকে প্রহরী নিযুক্ত থাকিবে। বিপক্ষদল হইতে সামান্য একটি প্রাণীও আমাদের নির্দ্দিষ্ট সীমা যেন অতিক্রম করিয়া না আসিতে পারে— সে বিষয়েও বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে। আবার এদিকেও শিবিরদ্বার চতুষ্টয়ে এবং সীমান্ত স্থানে রক্ষীদিগের উপরও সজ্জিত সৈন্য দ্বারা বিশেষ সতর্কে শিবির রক্ষা করিতে হইবে।”

 মারওয়ান সৈন্যাধ্যক্ষগণকে আহ্বান করিয়া আরও আজ্ঞা করিল, “যে সকল সৈন্য বিশেষ শিক্ষিত ও পুরাতন, তাহাদের দ্বারা শিবির এবং শিবির দ্বার চতুষ্টয় রক্ষা করিতে হইবে। উত্তর, পূর্ব্ব ও দক্ষিণ সীমার প্রত্যেক সীমায় সহস্র সহস্র সৈন্য তীর, বর্শা ও তরবারিহস্তে রক্ষীরূপে দণ্ডায়মান থাকিবে। শিবিরের মধ্যে যেখানে যেখানে প্রহরী নিযুক্ত আছে, সেই সেই স্থানে দ্বিগুণ প্রহরী নিযুক্ত করিতে হইবে ও সৈন্যাধ্যক্ষগণ আপন সৈন্যদলের প্রতি সম্ভবমত বিশেষ সতর্কভাবে দৃষ্টি রাখিবেন।

 ওমর আলীর বধসাধন হইতে কলা প্রভাত পর্য্যন্ত সাধ্য মত সতর্কতার সহিত থাকিতে হইবে। সৈন্যাধ্যক্ষগণ অশ্বারোহী হইয়া মুহূর্ত্তে মুহূর্ত্তে শিবিরের চতুষ্পার্শ্ব পরিবেষ্টন করিবেন। ওমর আলীর বধসাধনে হর্ষ, বিপদ, বিষাদ সকলই রহিয়াছে; সকল দিকেই দৃষ্টি রাখিতে হইবে। সাবধান! আমার এই আজ্ঞার অণুমাত্রও যেন অন্যথা না হয়। যে সকল নূতন সৈন্য গ্রহণ করা হইয়াছে, তাহাদিগকে কখনই শিবির-রক্ষার কার্য্যে, কি সীমারক্ষার কার্য্যে, কি প্রহরীর কার্য্যে—কোনরূপ কার্য্যে নিযুক্ত করা হইবে না। এমন কি, আমার দ্বিতীয় আদেশ না হওয়া পর্য্যন্ত তাহারা শিবিরমধ্যে প্রবেশ করিতে পারিবে না। প্রকাশ্যভাবে তাহাদিগকে এ সকল কথা না বলিয়া বাহিরের অন্য কোন কার্য্যে,—কি শূলদণ্ড যে প্রণালীতে রক্ষা করার আদেশ হইয়াছে, তাহাতেই নিযুক্ত করিতে হইবে। কিন্তু সে সপ্তচক্রের সীমাচক্রে, কি ষষ্ঠ বা পঞ্চম চক্রে তাহাদিগকে নিযুক্ত করা হইবে না। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় চক্রেই তাহাদের স্থান,—শূলদণ্ডের নিকট হইতে