চোরের ন্যায় শত্রুগৃহে প্রবেশ করে এবং শৃগালের ন্যায় শঠতা করিয়া কার্য্যোদ্ধারের পথ দেখে। ওমর, ভয় কি? কোন চিন্তা করিও না। নিশার শেষ—যুদ্ধেরও শেষ—আমারও শেষ। আর যাহার যাহা শেষ, তাহাও বুঝিতে পার। তাই বলিয়া দামেস্ক-রাজ যুদ্ধে ক্ষান্ত দিবে না। বিন্দুপরিমাণ শোণিত থাকিতে দামেস্ক-রাজ নিরাশ হইবে না। মারওয়ান মারা গিয়াছে, ক্ষতি কি? তুমিই সেনাপতি। যদি মারওয়ান যমপুরী না গিয়া থাকে, ভালই। উভয়েই সেনাপতি, উভয়েই মন্ত্রী। যুদ্ধনিশান উড়াইয়া দাও, রণবাদ্য বাজিতে থাকুক! মারওয়ান ও অলীদ শিবিরে ফিরিয়া আসিলেও যুদ্ধ, না আসিলেও যুদ্ধ। দেখ ওমর! তুমি নামে মাত্র সেনাপতি, আজ মহারাজ স্বয়ং যুদ্ধে যাত্রা করিবেন। চিন্তা কি?”
অকস্মাৎ ভেরী বাজিয়া উঠিল। এজিদ-শিবিরে যাহারা জাগিয়াছিল তাহারা শুনিল, ভেরী বাজাইয়া ঘোষিত হইতেছে: “শিবির-রক্ষকদের কৌশলে আজ নিশীথ সময়ে তিনজন লোেক ধৃত হইয়া মোহাম্মদ হানিফার শিবিরে নজরবন্দী মতে কয়েদ আছে। যদি কাহারও ইচ্ছা হয়, যাচ্ঞা করিলে ভিক্ষাস্বরূপ আমাদের প্রভু তাহাদিগকে ছাড়িয়া দিতে সম্মত আছেন।”
শিবিরস্থ সকলেই ঘোষণা শুনিয়া আশ্চর্য্যান্বিত হইল। “আমাদের ত কেহ নহে? আমাদের শিবিরের ত কোন প্রভু নহেন?”—এইরূপ কথার আন্দোলন হইতে লাগিল। এজিদ মহামতিও স্বকর্ণে ঘোষণা শুনিলেন।
ওমর বলিল, “মহারাজ, অনুমানে কি বুঝা যায়?
“তোমাদের প্রধান মন্ত্রী, আর ওত্বে অলীদ।”
“তবে তিন জনের কথা কেন?”
“বোধ হয়, মন্ত্রিবরের সহিত কোন সেনা গিয়া থাকিবে, কি শিবিরের অন্য কেহ হইবে। কি চমৎকার বুদ্ধি! হানিফার নিকট আমি ভিক্ষা করিব? ধিক্ এজিদের! অমন সহস্র মারওয়ান বন্দী হইলেও এজিদ কাহারও নিকট ভিক্ষা করবে না। আমি প্রস্তুত, কেবল অস্ত্র ধরিতে বিলম্ব। ওমর! তুমি সৈন্যসহ যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করিয়া এক শ্রেণীতে সমুদয় সৈন্য দণ্ডায়মান করিয়া