হাসান বলিলেন, “ভ্রাতঃ! একটু বিবেচনা করিয়া কার্য্য করাই ভাল। আমরা অগ্রে কিছুই বলিব না, এজিদ যাহা লিখিয়াছে, তাহার কোন উত্তর দিব না। দেখি সে কোন্ পথে যায়, কি উপায় অবলম্বন করে।”
আবদর রহমান বলিলেন, “ভ্রাতঃ! আপনার কথা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু বিষধর সর্প যখন ফণা তুলিয়া দাঁড়ায়, তখনি তাহার মাথা চূর্ণ করা আবশ্যক; নতুবা সময় পাইলে সে নিশ্চয়ই দংশন করে। এজিদও কালসর্প। উহার মস্তক প্রথম উত্তোলনেই চূর্ণ করিয়া ফেলা বিধেয়, বিশেষতঃ আপনার প্রতিই উহার বেশী লক্ষ্য।”
গম্ভীরভাবে হাসান কহিলেন, “এখনও সে সময় হয় নাই, আর একবার পরীক্ষা করিয়া দেখি। এবারে নিরুত্তরই সদুত্তর মনে করিয়াছি।”
হোসেন বলিলেন, “আপনার আজ্ঞা শিরোধার্য্য। কিন্তু একেবারে নিরুত্তর হইয়া থাকা আমার বিবেচনায় যুক্তিযুক্ত নহে; আপনার আদেশ লঙ্ঘন করিব না। আমি কাসেদকে বিদায় করিতেছি। পত্রখানা আমার হস্তে প্রদান করুন।”
হোসেনের হস্তে পত্র দিয়া হাসান রওজা হইতে নিকটস্থ উপাসনা মন্দিরাভিমুখে চলিয়া গেলেন। কাসেদকে সম্বোধন করিয়া হোসেন বলিতে লাগিলেন, “কাসেদ! আজ আমি রাজনীতির মস্তকে শত পদাঘাত করিতাম, আজ আমি চিরপদ্ধতি, প্রাচীন নীতি উপেক্ষা করিয়া এই পত্রের সমুচিত উত্তর প্রদান করিতে কৃতসঙ্কল্প হইয়াও ভ্রাতৃ-আজ্ঞা লঙ্ঘন মহাপাপ জানিয়া তোমার প্রাণ তোমাকে অর্পণ করিলাম। কম্জাৎ এজিদ যে পত্র দিয়া তোমাকে মদিনায় পাঠাইয়াছে, ইহার প্রতি অক্ষরে শত শত বার পাদুকাঘাত করিলেও আমার ক্রোধের অণুমাত্র উপশম হয় না। কি করি, ধর্ম্মগ্রন্থে লিখিত ভাষার অক্ষর ইহাতে সন্নিবেশিত আছে বলিয়াই তাহা করিলাম না। ফিরিয়া গিয়া সেই কম্জাৎকে এই সকল কথা অবিকল বলিও এবং দেখাইও যে তাহার পত্রের উত্তর এই—
এই কথাগুলি বলিয়া পত্রখানি শত খণ্ড করিয়া কাসেদের হস্তে দিয়া হোসেন আবার বলিলেন, “যাও!—ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়া যাও যে, আজ এই