নিমন্ত্রণ 8 & যত লিখে যাই ততই ভাবনা আসে, লেফাফার পরে কার নাম দিতে হবে ; মনে মনে ভাবি গভীর দীর্ঘশ্বাসে, কোন দূর যুগে তারিখ ইহার কবে । মনে ছবি আসে— ঝিকিমিকি বেলা হল, বাগানের ঘাটে গা ধুয়েছ তাড়াতাড়ি ; কচি মুখখানি, বয়স তখন ষোলো ; তনু দেহখানি ঘেরিয়াছে ডুরে শাড়ি। কুঙ্কুমর্ফোটা ভুরুসঙ্গমে কিবা, শ্বেতকরবীর গুচ্ছ কর্ণমূলে ; পিছন হইতে দেখিল্ল কোমল গ্রীবা লোভন হয়েছে রেশমচিকন চুলে। তাম্রথালায় গোড়ে মালাখানি গেথে সিক্ত রুমালে যত্নে রেখেছ ঢাকি, ছায়া-হেলা ছাদে মাতুর দিয়েছ পেতে— কার কথা ভেবে বসে আছ জানি না কি ! আজি এই চিঠি লিখিছে তো সেই কবি— গোধূলির ছায়া ঘনায় বিজন ঘরে, দেয়ালে ঝুলিছে সেদিনের ছায়াছবি— শব্দটি নেই, ঘড়ি টিক্টিক করে। ওই তো তোমার হিসাবের ছেড়া পাতা, দেরাজের কোণে পড়ে আছে আধুলিটি । কতদিন হল গিয়েছ ভাবিব না তা, শুধু রচি বসে নিমন্ত্রণের চিঠি।
পাতা:বীথিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।