8b ছুটির লেখা ধুলায় লোটে রাঙাপাড়ের আচলখানা, দুই চোখে তার নীল আকাশের সুদূর ছুটি ; কানে কানে কে কথা কয় যায় না জানা, মুখের পরে কে রাখে তার নয়নহুটি । মর্মরিত শু্যামল বনের কাপন থেকে চমকে নামে আলোর কণা আলগা চুলে ; তাকিয়ে দেখে নদীর রেখা চলছে বেকে— দোয়েল-ডাকা ঝাউয়ের শাখা উঠছে তুলে । সম্মুখে তার বাগানকোণায় কামিনী ফুল আনন্দিত অপব্যয়ে পাপড়ি ছড়ায় । বেড়ার ধারে বেগনিগুচ্ছে ফুল্ল জারুল দখিন-হাওয়ার সোহাগেতে শাখা নড়ায় । তরুণ রৌদ্রে তপ্ত মাটির মৃত্নশ্বাসে তুলসিঝোপের গন্ধটুকু ঢুকছে ঘরে । খামখেয়ালি একটা ভ্রমর আশে-পাশে গুঞ্জরিয়া যায় উড়ে কোন বনাস্তরে । পাঠশালা সে ফাকি দিয়ে পালিয়ে এড়ায়, শেখার মতো কোনো কিছুই হয় নি শেখা ; আলোছায়ায় ছন্দ তাহার খেলিয়ে বেড়ায় আলুথালু অবকাশের অবুঝ লেখা । সবুজ সোনা নীলের মায়া ঘিরল তাকে ; শুকনো ঘাসের গন্ধ আসে জানলা ঘুরে ; পাতার শব্দে, জলের শব্দে, পাখির ডাকে প্রহরটি তার আঁকাজোকা নানান সুরে।
পাতা:বীথিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।