নাট্যশেষ দূর অতীতের পানে পশ্চাতে ফিরিয়া চাহিলাম ; হেরিতেছি যাত্রী দলে দলে । জানি সবাকার নাম, চিনি সকলেরে। আজ বুঝিয়াছি, পশ্চিম-আলোতে ছায়া ওরা। নটরূপে এসেছে নেপথ্যলোক হতে দেহ-ছদ্মসাজে ; সংসারের ছায়ানাট্য অন্তহীন, সেথায় আপন পাঠ আবৃত্তি করিয়া রাত্রিদিন কাটাইল ; সূত্ৰধার অদৃষ্টের আভাসে আদেশে চালাইল নিজ নিজ পালা, কভু কেঁদে কভু হেসে নানা ভঙ্গী নানা ভাবে । শেষে অভিনয় হলে সারা দেহবেশ ফেলে দিয়ে নেপথ্যে অদৃশ্যে হল হারা। যে খেলা খেলিতে এল হয়তো কোথাও তার অাছে নাট্যগত অর্থ কোনোরূপ, বিশ্বমহাকবি-কাছে প্রকাশিত। নটনট রঙ্গসাজে ছিল যতক্ষণ সত্য বলে জেনেছিল প্রত্যহের হাসি ও ক্ৰন্দন, উত্থানপতন বেদনার। অবশেষে যবনিকা নেমে গেল ; নিবে গেল একে একে প্রদীপের শিখা ; স্নান হল অঙ্গরাগ ; বিচিত্র চাঞ্চল্য গেল থেমে ; যে নিস্তব্ধ অন্ধকারে রঙ্গমঞ্চ হতে গেল নেমে স্তুতি নিন্দ সেথায় সমান, ভেদহীন মন্দ ভালো, , দুঃখসুখভঙ্গী অর্থহীন, তুল্য অন্ধকার আলো, লুপ্ত লজ্জাভয়ের ব্যঞ্জনা। যুদ্ধে উদ্ধারিয়া সীত পরক্ষণে প্রিয়হস্ত রচিতে বসিল তার চিতা ;
পাতা:বীথিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।