পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুরের কথা እ &ኃ°ሏ এ দেশের সংগীতের মূলধন, সেই বারো সুরই যে সে দেশের সংগীতের মূলধনএ কথা সর্ববাদিসম্মত। তবে আমরা বলি যে, সে মূলধন আমাদের হাতে স্বদে বেড়ে গিয়েছে। আমাদের হাতে কোনো ধন যে স্বদে বাড়ে, তার বড়ো একটা প্রমাণ পাওয়া যায় না। তা ছাড আমি পূর্বে দেখিয়েছি যে, সুরের এই অতিমুদের লোভে আমরা সংগীতের মূলধন হারাতে বসেছি। সুতরাং এ বিষয়ে আর বেশি-কিছু বলা নিম্প্রয়োজন। দেশীর সঙ্গে বিলেতি সংগীতের আসল প্ৰভেদটা কণখ নিয়ে নয়, কর-খল নিয়ে। BLA=রে - CLA=ক্লের সঙ্গে কর-খলের, কানের দিক থেকেই হােক আর মানের দিক থেকেই হোক, একটা-যে প্ৰকাণ্ড প্ৰভেদ আছে- এ হচ্ছে একটি “প্ৰকাণ্ড সত্য’। এ প্ৰভেদ উপাদানের নয়, গড়নের। অতএব রাগ ও মেলডির ভিতর পার্থক্য হচ্ছে ব্যাকরণের, এবং একমাত্র ব্যাকরণেরই ৷ সুতরাং আমরা যদি বিলেতি ব্যাকরণ অনুসারে সুর সংযোগ করি তা হলে তা রাগ না হয়ে মেলডি হবে, এবং তাতে অবশ্য রাগের কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হবে না। আমরা ইংরেজি ব্যাকরণ অনুসারে ইংরেজিভাষা লিখলে সে লেখা ইংরেজিই হয়, এবং তাতে বাংলাসাহিত্যের কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না, যদিচ এ ক্ষেত্রে শুধু ব্যাকরণ নয় শব্দও বিদেশী । কিন্তু যেমন কতকটা ইংরেজি এবং কতকটা বাংলা ব্যাকরণ মিলিয়ে, এবং সেইসঙ্গে বাংলা শব্দের অনুবাদের গোজামিলন দিলে, তা বাবু ইংলিশ হয়, এবং উক্ত পদ্ধতি অনুসারে বাংলা লিখলে তা সাধুভাষা হয়- তেমনি ঐ দুই ব্যাকরণ মেলাতে বসলে সংগীতেও আমরা রাগ-মেলডির একটি খিচুড়ি পাকাব। সাহিত্যের খিচুড়িভোগে যখন আমার রুচি নেই, তখন সংগীতের ও-ভোগ যে আমি ভোগ করতে চাই নে, cन कशी दलीछे दांछलJ । দেশী বিলেতি সংগীতের মধ্যে আর-এ কটা স্পষ্ট প্ৰভেদ আছে। বিলেতি সংগীতে হারমনি আছে, আমাদের নেই। এই হারমনি-জিনিসটে স্বরের যুক্তাক্ষর বৈ আর-কিছুই নয়। অর্থাৎ ও-বস্তু হচ্ছে সংগীতের বর্ণপরিচয়ের দ্বিতীয়ভাগের অধিকারে । আমাদের সংগীত এখনো প্ৰথমভাগের দখলেই আছে। আমাদের পক্ষে সংগীতের দ্বিতীয়ভাগের চর্চা কলম্বা উচিত কি না, সে বিষয়ে কেউ মনস্থির করতে পারেন নি। অনেকে ভয় পান যে, দ্বিতীয়ভাগ ধরলে তঁরা প্ৰথমভাগ ভুলে যাবেন। তা ভুলুন আর না ভুলুন, তারা যে প্রথমভাগকে