পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शब्लib-जभiनi52 V9) ধৰ্ম্মিল্প চাপিয়ে দিতে সংকুচিত না হয়, যদিচ সে বেচারারা নীরবে পুরুষের সব অত্যাচারই সহ করে থাকে। বঙ্কিমী যুগে সংস্কৃত শব্দের ব্যবহার কিছু কম ছিল না। অথচ স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্ৰও ‘প্রাডুবিবাক’ বাক্যটি ‘মলিম চে'র ন্যায় কটু ভাষার হিসাবে গণ্য ক’রে চাের এবং বিচারপতিকে একই আসনে বসিয়ে দিয়েছিলেন । 'প্ৰাড়বিবাক’ বেচার বাঙালিজাতির নিকট এতই অপরিচিত ছিল যে, বঙ্কিমচন্দ্ৰেৱ হাতে তার ঐ রূপ লাঞ্ছনাতেও কেউ আপত্তি করে নি। কিন্তু আজকাল ওর চাইতেও অপরিচিত শব্দও নতুন গ্রন্থের বক্ষে কৌস্তুভমণির মতো বিরাজ করতে দেখা যায়। দৃষ্টান্তস্বরূপ আমি দু-একটির উল্লেখ করব। শ্ৰীযুক্ত অক্ষয়কুমার বড়াল জাতকবি। তার ভালো-মন্দ-মাঝারি সকল কবিতাতেই তার কবির জাতির পরিচয় পাওয়া যায়। বোধ হয় তঁর রচিত এমন-একটি কবিতাও নেই, যার অন্তত একটি চরণেও ধ্বজবজাম্বুশের চিহ্ন না লক্ষিত নয়। সত্যের অনুরোধে এ কথা আমি স্বীকার করতে বাধ্য যে, তার নতুন পুস্তকের নামটিতে আমার একটু খটকা লেগেছিল। ‘এষা’ শব্দের সঙ্গে আমার ইতিপূর্বে কখনো দেখা-সাক্ষাৎ হয় নি, এবং তার নামও আমি পূর্বে কখনো শুনি নি। কাজেই আমার প্রথমেই মনে হয়েছিল যে, হয়তো “আয়েষ্য’ নয়তো “এশিয়া’ কোনোরূপ ছাপার। ভুলে 'এষা'-রূপ ধারণ করেছে। আমার এরূপ সন্দেহ হবার কারণও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বঙ্কিমচন্দ্র যখন আয়েযাকে নিয়ে নভেল লিখেছেন, তখন তাকে নিয়ে অক্ষয়কুমার যে কবিতা রচনা করবেন, এ তে আর আশ্চৰ্য হবার কারণ কী থাকতে পারে। ‘আবার বলি ওসমান ! এই বন্দী আমার প্ৰাণেশ্বর। ’- এই পদটির উপর রমণীহৃদয়ের সপ্তকাণ্ড-রামায়ণ খাড়া করা কিছু কঠিন নয়। তার পর ‘এশিয়া, প্ৰাচীর এই নবজাগরণের দিনে তার প্রাচীন নিদ্রাভঙ্গ করবার জন্য যে কবি উৎসুক হয়ে উঠবেন, এও তো স্বাভাবিক। যার ঘুম সহজে ভাঙে না, তার ঘুম ভাঙবার দুটিমাত্র উপায় আছে- হয় টেনে- হিচড়ে, নয় ডেকে । এশিয়ার ভাগ্যে টানা-হেঁচড়ানো ব্যাপারটা তো পুরোদমে চলছে, কিন্তু তাতেও যখন তার চৈতন্য হল না, তখন ডাকা ছাড়া আর কী উপায় আছে । আমাদের পূর্বপুরুষেরা এশিয়াকে কাব্যে দর্শনে নানারূপ ঘুমপাড়ানি-মাসিপিসির গান গেয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে গেছেন। এখন আবার জাগাতে হলে এ যুগের কবির ‘জাগর’-গান গেয়েই তাকে জাগাতে পারবেন । সে গান অনেক কবি সুরে-বেসুরে গাইতেও শুরু করে দিয়েছেন । সুতরাং আমার সহজেই মনে হয়েছিল যে, অক্ষয়কুমার বড়ালও সেই কাৰ্যে ব্ৰতী হয়েছেন। কিন্তু এখন শুনছি যে, ও ছাপার ভুল নয়, আমারই ভুল। প্ৰাচীন গাথার ভাষায় নাকি 'এবা’র অর্থ অন্বেষণ । একালের লেখকেরা যদি শব্দের অন্বেষণে সংস্কৃত-যুগ ডিঙিয়ে একেবারে প্রাচীন গাথা-যুগে গিয়ে উপস্থিত হন, তা হলে একেলে V9