পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীরবলের হালখাতা جوي ধরা নয়। দেহের নবদ্বার বন্ধ করে দিলে মনের ঘর অলৌকিক আলোকে কিংবা পারলৌকিক অন্ধকারে পূর্ণ হয়ে উঠবে- বলা কঠিন। কিন্তু সর্বলোকবিদিত সহজ সত্য এই যে, যার ইন্দ্ৰিয় সচেতন এবং সজাগ নয়, কাব্যে কৃতিত্ব লাভ করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব। জ্ঞানাঞ্জন-শলাকার অপপ্রয়োগে যাদের চক্ষু উল্মীলিত না হয়ে কানা হয়েছে, তারাই কেবল এ সত্য মানতে নারাজ হবেন। প্ৰকৃতিদত্ত উপাদান নিয়েই মন বাক্যচিত্র রচনা করে। সেই উপাদান সংগ্ৰহ করবার, বাছাই করবার এবং ভাষায় সাকার করে তোলবার ক্ষমতার নামই কবিত্বশক্তি। বস্তুজ্ঞানের অটল ভিত্তির উপরেই কবিকল্পনা প্ৰতিষ্ঠিত। মহাকবি ভাস বলেছেন যে, সুনিবিষ্ট লোকের রূপ বিপৰ্যয় করা অন্ধকারের ধর্ম। সাহিত্যে ও রূপ করাতে প্ৰতিভার পরিচয় দেওয়া হয় না ; কারণ প্ৰতিভার ধর্ম হচ্ছে প্ৰকাশ করা, অপ্ৰত্যক্ষকে প্ৰত্যক্ষ করা- প্ৰত্যক্ষকে অপ্ৰত্যক্ষ করা নয়। অলংকারশাস্ত্রে বলে, অপ্রকৃত অতিপ্ৰকৃত এবং লৌকিক-জ্ঞান-বিরুদ্ধ বর্ণনা কাব্যে দোষ হিসেবে গণ্য। অবশ্য পৃথিবীতে যা সত্যই ঘটে থাকে, তার যথাযথ বর্ণনাও সব সময়ে কাব্য নয়। আলংকারিকেরা উদাহরণস্বরূপ দেখান যে, ‘গৌী তৃণং অত্তি’ কথাটা সত্য হলেও ও কথা বলায় কবিত্বশক্তির বিশেষ পরিচয় দেওয়া হয় না। তাই বলে “গোরুরা ফুলে ফুলে মধুপান করছে’ এরূপ কথা বলতে, কী বস্তুজ্ঞান কী রসজ্ঞান, কোনোরূপ জ্ঞানের পরিচয় দেওয়া হয় না। এ স্থলে বলে রাখা আবশ্যক যে, নিজেদের সকলপ্রকার ক্রটির জন্য আমাদের পূর্বপুরুষদের দায়ী করা বর্তমান ভারতবাসীদের একটা রোগের মধ্যে হয়ে পড়েছে। আমাদের বিশ্বাস, এ বিশ্ব নশ্বর এবং মায়াময় ব’লে আমাদের পূর্বপুরুষেরা বাহাজগতের কোনোরূপ খোঁজখবর রাখতেন না। কিন্তু এ কথা জোর করে বলা যেতে পারে। ষে, তারা কস্মিনকালেও অবিদ্যাকে পরাবিদ্যা বলে ভুল করেন নি, কিংবা একলম্বেন্ধ যে মনের পূর্বোক্ত প্ৰথম অবস্থা হতে DBDBD DDDB DBDD DBBYS iEE DDLDLL BBBBD DDDBE t S DBS BD s সত্যেরই পরিচয় দেয় যে, অপরাবিষ্ঠা সম্পূর্ণ আয়ত্ত না হলে কারো পক্ষে পরাবিদ্যা লাভের অধিকার জন্মায় না ; কেননা, বিরাটের জ্ঞানের ক্ষেত্রেই স্বরাটের জ্ঞান অঙ্কুরিত হয়। আসল কথা হচ্ছে, মানসিক আলস্যবশতই আমরা সাহিত্যে সত্যের ছাপ দিতে অসমৰ্থ। আমরা যে কথায় ছবি আঁকতে পারি নে, তার একমাত্র কারণ- আমাদের চোখ ফোটবার আগে মুখ ফোটে। একদিকে আমরা বাহবিস্তুর প্রতি যেমন বিরক্ত, অপর দিকে অহং-এর প্রতি ঠিক তেমনি অনুরক্ত ; আমাদের বিশ্বাস যে, আমাদের মনে যে-সকল চিন্তা ও ভাবের উদয় হয়, তা এতই অপূর্ব এবং মহাৰ্য যে, স্বজাতিকে তার ভাগ না দিলে ভারতবর্ষের