দুম্বা তার কানের দু-পাশে গুগলী পেঁচ দুই শিং পাথরে ঘষে বললে— “এখানে আমরা ইচ্ছে সুখে এসে ধরা পড়ে কামিখ্যের ভেড়া বনে গেছি, যাব কোথায়, যাবার স্থান নেই।”
রিদয় অবাক হয়ে বললে—“কি বল এই কামরূপ কামিখ্যের মন্দির? এইখানে মানুষকে তার ভেড়া ছাগল বানিয়ে রাখে!”
হাঁও বটে নাও বটে, এই ভাবে ঘাড় নেড়ে দুম্বা বললে—“এটা কি গোয়াল না এটা আমাদের বাড়ি—এটা একটা যাদুঘর। এখানে যা দেখছ সব ইন্দ্রজাল, ভৌতিক ব্যাপার। এদিক দিয়ে পাখিরা পর্যন্ত উড়ে চলতে ভয় পায়, তোমরা কার পরামর্শে এখানে এলে শুনি? মহাভারতের ধর্মাবতার কঙ্ক তার কোনো পুরুষের কেউ নয়, সেই বকাধাৰ্মিক কঙ্কপাখির সঙ্গে তোমাদের পথে দেখা হয়নি তো?”
কঙ্ক-পাখির পাল্লায় পড়েই তারা এদিকে এসেছে শুনে দুম্বা হা-হুতাশ করে বললে—“এমন কাজও করে, বকাধার্মিকের কাজই হচ্ছে নানা ছলে লোককে ভুলিয়ে এই কামরূপে এনে মানুষকে ভেড়া, ভেড়াকে ছাগল বানিয়ে দেওয়া, এটা বুঝলে না—কি আপশোষ!”
রিদয় ভয় পেয়ে বলে উঠল—“এখন উপায়!”
দুম্বা খানিক ভেবে বললে—“উপায় আর কি, এক উপায় যদি বকধাৰ্মিক এই ঝড়ে রাস্তা ভুলে অন্যদিকে গিয়ে পড়ে থাকে তবেই তোমরা এবারের মতো বেঁচে গেলে।”
চকা শুধোলে—“আর সে যদি এসে পড়ে তো কি হবে?”
দুম্বা উত্তর করলে—“সে এসে ঠোঁট দিয়ে তোমাদের মাথা ফুটো করে যা কিছু বুদ্ধি আছে মগজের সঙ্গে সবটুকু বার করে নেবে; আর তোমরা কেউ বোকা ছাগল, কেউ মেড়া কেউ ভেড়া হয়ে আ—আ করে তাকেই তোমাদের ভেড়া বানিয়ে দেবার জন্যে বাহবা ধন্যবাদ দিতে থাকবে।”