পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১২৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

আমরা খাঁড়া আর হাড়িকাট সামনে রেখে হাড়িপ-বাবা আর হাঁড়ি-ঝী মাতাজীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি—তুমি খণ্ডা দ্বিখণ্ডা সুমুক্তি বাহার গরল ভাবহং মানুরিক্ত ঘুমাইয়া আছি স্মটিকের মুণ্ডি! আমাদের এ মাথায় কোনো কাজ করতে গেলেই গুরুর কোপে পড়তে হবে, প্রতিজ্ঞাভঙ্গ পাপে লিপ্ত হয়ে নরকেও যেতে হবে, এর জবাব আপনি কি দেন?”

 রিদয়কে আর কোনো জবাব দিতে হল না—খেঁকি-খেঁক-খেঁকি খেঁকখেকানি তিনটে হেঁড়েল হঠাৎ এসে তিন মেড়ার লেজ ধরে টেনে নিয়ে চলল, হাঁসেরা ডানা ঝটাপট করে গুহার মধ্যে অন্ধকারে উড়ে বেড়াতে লাগল, রিদয় তাড়াতাড়ি দুম্বার পিট চাপড়ে দুই হাতে তার ঘাড় বেঁকিয়ে ধরে হুকুম দিলে—“শিং টিং চট্‌, দে ঢুঁসিয়ে চটপট।” দুম্বা আর ভাবতে সময় পেলে না, অন্ধকারে সামনে আর ডাইনে-বাঁয়ে তিন ঢুঁ বসিয়ে দিলে। খটাশ-খটাশ করে তিনটে হাঁড়িমুখো হাড়খেগো হেঁড়েলের মাথার খুলি ফেটে চৌচির হয়ে গেল! ঠিক সেই সময় বাইরে দুদ্দাড় করে ঝড়বৃষ্টি নামল—

 শিল পড়ে তড়বড় ঝড় বহে ঝড়ঝড়
 হড়মড় কড়মড় বাজে—ঘন-ঘন ঘন-ঘন গাজে!
 ঝঞ্ঝনার ঝঞ্ঝণী বিদ্যুৎ চকচকি
 হড়মড়ি মেঘের ভেকের মকমকি
 ঝড়ঝড়ি ঝড়ের জল ঝরঝরি
 তড়তড়ি শিলার জলের তরতরি
 ঘুটঘুট আঁধার বজ্রের কড়মড়ি
 সাঁই-সাঁই বাতাস শীতের থরথরী।

 ভেড়াগুলো কুরবী-কুরবী বলতে-বলতে এ ওর মুখের দিকে ফ্যেল-

১২৭