বেরাল-ছানাকে দাওয়া থেকে হঠাৎ ঠেলে ফেললে, কতটা তার লাগে।
গোটাকতক ছাতারে-পাখি বাঁশঝাড়ের তলায় শুকনো পাতা উল্টে-উল্টে ফড়িং খেয়ে বেড়াচ্ছিল, বুড়ো-আংলা ডিগবাজি-খেয়ে পড়ে যেতে দেখে বলে উঠল—“ছি-ছি! ও হিরিদয় হল কি? ছি-ছি!” অমনি কুবোপাখি বাঁশের ডগা থেকে বলে উঠল—“দুয়ো, বেশ হয়েছে, দুয়ো!” আর অমনি চারদিক থেকে হাঁস, হাঁসের ছানা, মুরগি, মুরগির ছানা, কাদাখোঁচা, পানকৌড়ি এমনি সব ঘরের আশপাশের পোষা-পাখি বুনো-পাখি, মজা দেখতে ছুটে এসে রিদয়কে ঘিরে চেঁচাতে লাগল, হাসতে থাকল—“ছি-ছি, ছ্যা-ছ্যা, দেখ-দেখ! ঠিক হয়েছে! বেশ হয়েছে! বুড়ো-বুড়ো-বুড়ো-বুড়ো-আংলা! ও হিরিদয় হল কি?” কুঁকড়ো ঘাড় ফুলিয়ে বললে—“কি হল।” চড়াই ল্যাজ নেড়ে বললে—“এ কি, যক্ নাকি?”
রিদয় যখন মানুষ ছিল, তখন পাখিদের কিম্বা জানোয়ারদের কথা একটুও বুঝত না, কিন্তু যক্ হয়ে পরিষ্কার বুঝতে পারছে।
কুঁকড়ো বলছে—“কেমন, আর আমার ঝুঁটি ধরে টানবে?”
মুরগি অমনি বললে—“যেমন দুষ্টুমি, তেমনি শাস্তি হয়েছে! চুরি কর আমার ছানা! এইবারে এক ঠোকরে মাথা ফুটো করে দেব।” বলে মুরগিটা রিদয়কে ঠোঁট বাড়িয়ে তেড়ে গেল।
পাতি-হাঁস অমনি বলে উঠল—“থাক, থাক, এবার মাপ কর!”
কুঁকড়ো মাথা নেড়ে বলল—“তোর এমন দশা করলে কে?”
রাজহাঁস অমনি নাক-তুলে শুধোলে—“এ্যাঁঃ?”
রিদয় পাখিদের কথা বুঝতে পারছে জেনে মনে-মনে খুশি হল বটে, কিন্তু মুরগি, হাঁস—যারা একদিন তাকে দেখলে ভয়ে দৌড় দিত, এখন তারা মুখের সামনে দাঁড়িয়ে হাসবে, এটা রিদয় সইতে না পেরে, এক ঢিল ছুঁড়ে ধমকে উঠল—“প্যাঁক-প্যাঁক করিসনে বলছি—পালা!”