পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৩৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 মহাপ্রভু জগন্নাথ সুভদ্রা বলাই সাথ
 দেখিব অক্ষয় বটতলে,
 খাইয়া প্রসাদ ভাত মাথায় মুছিব হাত
 নাচি বেড়াই কুতূহলে
 ভবসিন্ধু বিন্দু জানি পার হইনু হেন মানি
 সাঁতার খেলিব সিন্ধুজলে॥

 নেংটির রাজা যখন কেল্লা ছেড়ে রানীকে নিয়ে পাছ-দুয়োর দিয়ে গঙ্গাসাগরের দিকে পলায়নের মতলব করছেন—লড়াই না দিয়ে, সেই সময় হাঁসের দল রিদয়কে নিয়ে দেওয়ানগিরির তলায় এসে উড়ে বসল। একদিকে নাটবাড়ির পাথরের পাঁচিল, আর একদিকে হাড়গিলের চর, এরি মাঝে জলের ধারে শুশনি কলমি শাক খেয়ে হাঁসের দল চরে বেড়াচ্ছে, এমন সময় আণ্ডামানি হাঁসের সঙ্গে দেখা, ছোট দল বড় দল দুই দলে অমনি কথাবার্তা চলল, সাঁতার খেলা আরম্ভ হল।

 যোগীগোফাতে ভেড়াদের নিয়ে যে কাণ্ড হয়েছে শুনে আণ্ডামানি বললে—“তা হলে শেয়াল লোভ সহজে ছাড়বে না, নিশ্চয়ই আমাদের পিছু নেবে, আর এখন দুদিন উড়ে কাজ নেই, এইখানেই থাকা যাক, আর ব্রহ্মপুত্রের বাঁক ধরে মানস সাগরেও গিয়ে কাজ নেই। এইখান থেকে বাঁহাতি মোড় নিয়ে একেবারে পাহাড়ের পাশ দিয়ে সোজা উত্তরে চলাই ভালো।”

 চকা বললে—“অজানা রাস্তা কেমন করে যাব।”

 আণ্ডামানি অমনি জবাব দিলে—“অজানা নয়, উত্তর সমুদ্রের ধারে রুষ দেশে যে সব পাখিরা থাকে তারা পাহাড়ের এই গলি পথটা দিয়ে সোজা হিমালয়ের ওপারে চলে যায়। আজ ক’দিন ধরে দলে-দলে

১৪১