“এই ভাবেই সারা জীবন কাটাতে হবে। আপনার তো যাহোক একটা দাঁড়াবার স্থান আছে, আমাদের দশাটা ভাবুন তো। ভবঘুরের মতে—
যেখানে-সেখানে শোও আর খাও
পৃথিবীটা ঘিরে চক্কর দাও
শেষ একদিন অকস্মাৎ!
বিনি মেঘে বজ্রাঘাৎ!
“তাগে পেলেই মানুষ গুলি চালাচ্ছে আমাদের দিকে!”
হাড়গিলে গলার পালকের দাড়ি দুলিয়ে বললেন—“কথাটি তো বলেছ ঠিক, কিন্তু নাটবাড়ি হয়ে পর্যন্ত ঐ চুড়োটায় বাস করে আসছি সাতপুরুষ ধরে, আজ হঠাৎ চুড়ো থেকে চরে নেমে বসা কি কম কষ্টের কথা, আর ঐ হাড়গিলের চরটাও শুনেছি মানুষের চেঁচে ফেলে ওখান দিয়ে বড়-বড় মালের জাহাজ চালাবে!”
চকা এবারে আমতা-আমতা করে বললে—“তা হলে তো মুশকিল দেখছি, মানুষের সঙ্গে তো আমরা পেরে উঠব না, এবিষয়ে আপনি—”
এবারে হাড়গিলে ঠোঁট বাজিয়ে বলে উঠলেন—“আঃ, সে মানুষের কথা, যখন তারা আসবে তখন ভাবা যাবে। এখন একটা কথা শুধোই, এদিক দিয়ে চুয়োদের পল্টন যেতে দেখেছ কি?” হাজার-হাজার চুয়ো এইমাত্র এইদিক দিয়ে গেছে শুনে হাড়গিলে আকাশে চোখ তুলে বললে —"এতদিনে বুঝি গণেশের ইঁদুরের দফা রফা, আজ রাতের মধ্যেই চুয়োরা নাটবাড়ি দখল করবে।”
চকা ভয় পেয়ে বললে—“কি বলেন লড়াই বাধবে নাকি?”
হাড়গিলে বলে উঠলেন—“বাধবে আর কি, বিনা যুদ্ধে চুয়োরা আজ কেল্লা মেরে নেবে, রাজা গঙ্গাসাগরের দিকে রানীকে নিয়ে দৌড় দিয়েছেন।