রিদয়ের মুখে কথা নেই, ইনিই গণেশ! ভয়ে-ভয়ে সে এগিয়ে বললে—“মশায়ের নাম?”
উত্তর হল—“আমি গণপতি, কি চাই?”
রিদয় খুব নরম হয়ে বললে—“যে ইঁদুরগুলিতে চড়ে মশায় বেড়িয়ে বেড়ান সেগুলির বড় বিপদ উপস্থিত!”
গণেশ ভুরু কুঁচকে বললেন—“ইঁদুর! আমি তো কোনো দিন ইঁদুরে চড়িনে!”
রিদয় বললে—“আজ্ঞে, ভুলে যাচ্ছেন আপনি, হস্তী-বেশ ধরে যখন হাওয়া খেতে বেরোন, সেই সময় যে ইঁদুর আপনার গাড়ি—”
গণেশ হোঃ-হোঃ করে হেসে বললেন—“তুমি পাগল নাকি আমাকে শুদ্ধ গাড়ি টেনে চলতে পারে যে ইঁদুর তাকে তুমি কোথায় দেখলে? ছেলেবেলায় আমি দু-একটা ইঁদুর পুষেছিলেম কিন্তু সবগুলোর বাচ্চা হয়ে আমার ঘরে এমনি উৎপাত লাগালে যে, সব ক’টাকে আমি ইঁদুর-কলে ধরে বিদায় করেছি। তুমি ভুল খবর শুনেছ, ইঁদুরে আমি চড়িনে, হস্তীবেশেও সঙ সেজে আমি হাওয়া খেতে যাইনে, নিশ্চয়ই কেউ তোমায় ঠকিয়েছে!”
রিদয় অবাক হয়ে বললে—“সে কি মশায়, ঘরে-ঘরে ইঁদুরে-চড়া আপনার ছবি, তাছাড়া আমি নিজের চোখে দেখেছি আপনি ঢোল বাজিয়ে ইঁদুর নাচ করছেন আমাকে শাপ পর্যন্ত দিয়ে এলেন, এখন বলছেন উল্টো, আমাকে ছলনা করছেন!”
গণেশ গম্ভীর হয়ে বললেন—“বাপু আমি যাই করি, এটুকু জেনো আমি ছলনাও করিনি শাপও দিইনি! ইঁদুরেও চড়িনি কোনোদিন, ঢোলও পিটিনি। ওই আমার দরোয়ানগুলো মাঝে-মাঝে হোলিতে দেওয়ালিতে ঢোল পিটিয়ে আমার কান ঝালাপাল করে, ওদের গিয়ে শুধোও। যদি আর কোনো গণেশ থাকেন তো বলতে পারিনে।”