আকাশে একটা পা বাড়িয়ে চুয়োদের মতো ঝাঁপ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে আর কি! হাড়গিলে তার লেজ ধরে এক টান দিয়ে বললে—“কর কি, পড়ে মরবে যে!”
বেরাল ফ্যেল-ফ্যেল করে খানিক চেয়ে থেকে—“ইকি”—বলেই ফ্যেঁচ করে হেঁচে আস্তে-আস্তে পেছিয়ে এল।
ওদিকে নেংটির দল আস্তে-আস্তে কেল্লায় এসে যে যার ঘরে ঢুকে ধান ভানতে বসে গেল। চুয়ো তাড়াবার জন্যে হেড়ম্ব-গণেশের ঢোলককে ছাড়া আর কাউকে যে ধন্যবাদ দেওয়া দরকার সেটা তাদের মনেই এল না!
রাতের মধ্যে পেঁচার দল প্রায় বারোআনা মরা চুয়ো খেয়ে সাফ করে দিলে, বাকি যা রইল সেগুলোর উপরে সকালবেলায় কাক চিল এসে পড়ল। বেলা আটটার মধ্যে সব সাঙ্গ হয়ে গেল।
আজ অমাবস্যা তিথি, রাত্তিরটা হিমালয়ের এপারটায় কাটিয়ে কাল থেকে হাঁসেরা পাহাড়ের ওপারে নিজের-নিজের দেশের দিকে রওনা হবে, দেশের কথা ছাড়া আজ আর কারু মুখে অন্য কথা নেই। আকাশে মেঘ করেছে, বিষ্টি নেই, কেবল ঠাণ্ডা হাওয়া আর শীতালু বাতাস। মাথার উপর দিয়ে দলে-দলে পাখি হুহু করে উত্তরমুখে চলেছে—সবাই দেশে যেতে ব্যস্ত, তার ওপর এ-বছর পাখিদের বারোয়ারি পড়েছে। কুঁচেবক কুঁচিবক তারা বারোয়ারির নেমন্তন্ন করতে বেরিয়েছে, যার সঙ্গে দেখা হচ্ছে চেঁচিয়ে জানাচ্ছে পুর্ণিমার দিনে বারোয়ারিতে যেতে হবে, ভারি জলসা।
চকা নিমন্ত্রণ পেয়ে ভারি খুশি, রিদয়কে বললে—“তোমাদের দুজনের কপাল ভালো, বারো বছর অন্তর কৈলাস-পর্বতের ধারে মানস-সরোবরে এই বারোয়ারির মজলিস হয়, সেখানে সারসের নাচ, হরিণ-দৌড়, আর্গিনপাখির কনসার্ট, গাঙ-শালিকের গীত, ছুঁচোর কেত্তন, শেয়ালের যুক্তি, মেড়ার লড়াই, ভালুক-নাচ, সাপ-বাজি, মাছের চান, এমনি আরো কত