উপরে বসে একটা কালো পেঁচা কেবলি চেঁচাচ্ছে—“যো-মেঁ-র বাড়ি-যাঃ, মাথা খাঃ!”
ঝড় উঠল, তার সঙ্গে টিপটিপ বিষ্টি নামল, আরো দুটি পথিক নেউল আর খটাস তাড়াতাড়ি উঠোনে ঢুকে এদিক-ওদিক চাইতে-চাইতে রিদয়কে দেখে শুধোলে—“এটা কি গৌহাটির চটি, রাতে থাকবার ঘর পাওয়া যাবে কি এখানে?”
রিদয় বললে—“আমি তো গয়লাবাড়ি বলে এখানে ঢুকেছি কিন্তু অন্ধকারে কিছুই দেখছিনে। এটা গোয়াল কি চটি কি ধর্মশালা বা পাঠশালা কিছুই বোঝা যাচ্ছে না, কারু শাড়াশব্দ পাচ্ছিনে, কেবল একটা পেঁচা ডাকছিল একটু আগেই শুনেছি।”
খটাস বললে—“তবে নিশ্চয় এটা গঙ্গাযাত্রীর ঘর!”
নেউল বলে উঠল—“মাঠের মধ্যে কখনো মড়া পোড়াবার ঘাট হয়? বাড়িই বটে, তবে এটা কলুর বাড়ি কি গয়লাবাড়ি কিম্বা পুলিশের খাদাবাড়ি তা বোঝা যাচ্ছে না!”
খটাস বললে—“সেটা বোঝবার সহজ উপায় আছে।”
রিদয় শুধোলে—“কোনো বাড়ি সহজে চেনবার উপায়টা কি প্রকাশ কর!”
খটাস খানিক ভেবে বললে—“মানুষেরা নানা কাজের জন্যে নানারকম বাড়ি-ঘর বাঁধে তা তো জানো—উত্তরমুখো, দক্ষিণমুখো, পুবমুখো, পশ্চিমমুখো। গয়লা বাঁধবে একরকম, তেলি বাঁধবে অন্যরকম, মালি বাঁধবে একরকম, কুমোর বাঁধবে একরকম। আর্ট বোঝো না? কে কি রকম বাঁধবে তার হিসাবটা জানলেই কোনটা কি বাড়ি বোঝা যাবে।”
নেউল বললে—“হিসেবটা কেমন শুনি?”