কুল-কুল, ফুর্ফুর্! চারদিক আজ উল্সে উঠেছে, কেবল মাঝে বসে রয়েছে রিদয়—একলাটি মুখ-চুন করে। সে ভাবছে, কোথায় যাবে—কি করবে? সে যক্ হয়েছে, মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক উঠে গেছে। গণেশের অভিশাপে এখন অন্ধকার পাতালপুরীতে সাপের সঙ্গে যক্ হয়ে থাকা ছাড়া আর কি উপায় আছে? গণেশের সন্ধান করে শিবের বাড়ি কৈলাস-পর্বত পর্যন্ত যদি তাকে হেঁটে যেতে হয়, তাও স্বীকার, কিন্তু পাতালপুরীতে সে কিছুতে যেতে পারবে না! এই প্রতিজ্ঞা করে রিদয় কোমর-বেঁধে উঠে দাঁড়াল! এই সময় সেওলায়-পিছল রাস্তা দিয়ে গুগলী আস্তে আস্তে চলেছে। রিদয়কে গুগলী শুধোলে—“কোথায় যাওয়া হচ্ছে এত তাড়াতাড়ি?”
রিদয় পাখিদের কাছে, পশুদের কাছে দাবড়ি খেয়ে ঢিট হয়ে গিয়েছিল, এবারে সে খুব ভদ্রতা করে উত্তর দিলে—আজ্ঞে, আমি কৈলাস-পর্বতে শ্রীশ্রীগণেশঠাকুরের ছি-চরণে কিছু নিবেদন করতে যাচ্ছি। আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
গুগলী উত্তর করলে—“আমি গঙ্গাসাগরে ছান কত্তি যেতেছি।”
রিদয় মুচকে হেসে শুধোলে—“কতদিনে সেখানে পৌঁছবেন?”
“যে কয়দিনে পারি।” বলে গুগলী রিদয়কে শুধোলে—“কৈলাস-পর্বতে তুমি কহন পৌঁছাবে?”
“বোধ হয় দুচারদিনে।” বলে রিদয় আস্তে-আস্তে গুগলীর সঙ্গে চলল।
গুগলী খানিক চুপ করে থেকে বললে—“আমি বোধকরি দ্যেড় দিনট্যেকের মধ্যেই গঙ্গাসাগরে পৌঁচে যাব, কি বল?”
রিদয় এবার ঘাড়-নেড়ে বললে—“তা কেমন করে হবে? যে গুটিগুটি আপনি চলেছেন, তাতে ঐ হাঁসপুকুরে পৌঁছতেই তো আপনার একদিন লাগবে।”
২০