পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৮৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বোষ্টম-বাড়ির সেই কালো বেরালটাকে মনে আছে তো? সেই যেটা বোষ্টম বোয়ের হেঁসেলের মাছ রোজ নিয়ে পালাত, কোথায় সে লুকিয়ে মাছটা রাখত তা বোষ্টম না বোষ্টমী না কালো কেউ টের পেত না, সেই মাছের সন্ধান কে-কে পেয়েছিল দাদা, তুমি না আমি, রাজা না মন্ত্রী?”

 সব কাক অমনি এগিয়ে এসে নিজের-নিজের বড়াই করতে আরম্ভ করলে। কেউ বললে—“মাছ চুরি আবার একটা কাজের মধ্যে, আমি একবার একটা খরগোসের লেজ ঠুকরে দিয়েছিলেম; আর একটু হলেই সেটাকে নিয়ে চিলের মতো ছোঁ দিয়ে উড়েছি আর কি, এমন সময় সেটা তার গর্তে সেঁধিয়ে গেল!”

 আর এক কাগ বলে উঠল—“আরে বাবা খরগোসছানা বেরালছানা এদের নিয়ে খেলা করছ—মানুষের কাছে কখন এগিয়েছ? আমি একবার ফিরিঙ্গির বাড়িতে গিয়ে তাদের টেবিলের রূপোর কাঁটা চামচে চুরি করে সাফ বেরিয়ে এসেছি, একটি পালকে পর্যন্ত আঁচড় লাগেনি!”

 রিদয় থেকে-থেকে বলে উঠল—“এই বিদ্যের আবার এত বড়াই, এই বেলা ওসব চুরিচামারি ছাড়, না হলে মানুষ বিরক্ত হয়ে একদিন এমন গুলি চালাতে আরম্ভ করবে যে কাকবংশ ধ্বংস করে তবে ছাড়বে!”

 “কি বলিস?” বলে সব কাক রিদয়কে তেড়ে এল, মনে হল এখনি তাকে ছিঁড়ে খাবে।

 ঢোঁড়াকাক তাড়াতাড়ি সবাইকে ঠাণ্ডা করে বললে—“ছেলেমানুষ কি বলতে কি বলেছে। থাম হে ওকে মেরো না, রাজা তাহলে ভারি দুঃখিত হবেন! মনে নেই সেই যকের ধনটা বার করা চাই। ছোঁড়াটা না হলে সে কাজটা করে কে? তাছাড়া এটা মানুষ, একে মারলে পুলিশ হাঙ্গামা হতে পারে।”

১৮৫