কাকেরা রিদয়কে আর কিছু না বলে ঢোঁড়াকেই ধমকাতে লাগল—“হাঃ মানুষ, ভারি তো উনি বড়লোক যে ভয় করতে হবে, ঢের-ঢের অমন মানুষ দেখেছি—”
এই সময় ডোমকাক উপর থেকে হাঁক দিলে—“চালাও!” এবারে কাকের দল রিদয়কে নিয়ে কাকচিরার পতিত জমির দিকে চলেছে—গ্রাম নগর আর দেখা যাচ্ছে না, কেবল ধূ-ধূ বালি আর কাঁটাগাছ। মানুষ নেই, গরু নেই, পাখি নেই—কেবল আগুনের মতে রাঙা সূর্যটা পশ্চিম দিকে ডুবছে—সমস্ত আকাশে যেন আগুন ধরিয়ে দিয়ে।
ভর সন্ধ্যাবেলা ডোমকাক রিদয়কে ধরে নিয়ে কাকচিরার জঙ্গলে এসে নামল। ডোমকাক দূত হয়ে আগে গিয়ে সবার বাসায় খবর দিলে রাজা এলেন, অমনি সব কাকিনী “বা-বা-বা তোবা-তোবা” বলে বাসা ছেড়ে তামাশা দেখতে ছুটল।
শেয়ালের দল আহ্লাদে লেজ ফুলিয়ে হাঁক দিলে—“হুয়া—কয়েদ হুয়া, তোফা হুয়া!” চারদিকে হৈ-চৈ—ক্কা-ক্কা-হুয়া শব্দ উঠেছে, তারি মধ্যে ঢোঁড়া রিদয়ের কানে-কানে বললে—“আমি তোমার দিকে আছি, দেখ খবরদার ওদের কথা শুনে কোনো কাজ কর না। কাজ করিয়ে নিয়েই তোমায় মেরে ফেলবে, সাবধান।”
ডোমকাক এসে রিদয়কে টানতে-টানতে সেওড়াগাছের গোড়ায় গর্তটার মধ্যে নামিয়ে দিলে, রিদয় যেন জেরবার হয়ে পড়েছে এমনিভাবে আধমরার মতো গর্তের মধ্যে শুয়ে পড়ল। ডোম রাজা ডাকলে—“ওঠ, যা বলি তা কর।” রিদয় যেন শুনতেই পেলে না, চোখ বুজে রইল। ডোম তাকে ধরে যকের পেঁটরার কাছে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে বললে—“খোল্ এটা।”
রিদয় ধাক্কা দিয়ে ডোমকে সরিয়ে বললে—“খিদেয় পেট জ্বলছে এখন