“এধারে বউল ধরেছে।” রিদয়কে নিয়ে চলতি হাঁসেরা পাহাড় থেকে একদল ফিরতি হাঁসকে শুধিয়ে জানলে—ওধারে এখনো কুয়াশা কাটেনি; শিল পড়ছে; জল হিম; গাছে এখনো ফল ধরেনি! অমনি তারা ঢিমে চালে চলতে আরম্ভ করলে। তাড়াতাড়ি পাহাড়-অঞ্চলে গিয়ে লাভ কি, বলে তারা এগ্রাম-সেগ্রাম, নদীর এপার-ওপার করতে-করতে ধীরে-সুস্থে এগোতে থাকল।
গ্রামে-গ্রামে ঘরের মটকায় কুঁকড়ো সব পাহারা দিচ্ছে। ঘাটিতে-ঘাটিতে চলন্ত পাখিরা তাদের কাছে খবর পাচ্ছে। “কোন গ্রাম?” “তেঁতুলিয়া, সাবেক তেঁতুলিয়া—হাল তেঁতুলিয়া।” “কোন শহর?” “নোয়াখালি—খটখটে।” “কোন মাঠ?” “তিরপুরণীর মাঠ—জলে থৈথৈ।” “কোন ঘাট?” “সাঁকের ঘাট—গুগলী ভরা।” “কোন হাট?” “উলোর হাট—খড়ের ধুম।” “কোন নদী?” “বিষনন্দী—ঘোলা জল।” “কোন নগর?” “গোপাল নগর—গয়লা ঢের।” “কোন আবাদ?” “নসীরাবাদ—তামুক ভালো।” “কোন গঞ্জ?” “বামুনগঞ্জ—মাছ মেলা দায়।” “কোন বাজার?” “হালতার বাজার—পলতা মেলে।” “কোন বন্দর?” “বাগাবন্দর—হুক্কাহুয়া।” “কোন জেলা?” “রুরুলী জেলা—সিঁদুরে মাটি।” “কোন বিল?” “চলন বিল—জল নেই।” “কোন পুকুর?” “বাধা পুকুর— কেবল কাদা।” “কোন দীঘি?” “রায় দীঘি—পানায় ঢাকা।” “কোন খাল?” “বালির খাল—কেবল চড়া।” “কোন ঝিল?” “হীরা ঝিল—তীরে জেলে।” “কোন পরগনা?” “পাতলে দ—পাতলা হ।” “কোন ডিহি?” “রাজসাই—খাসা ভাই!” “কোন পুর?” “পেসাদপুর—পিপড়ে কাঁদে।” “কার বাড়ি?” “ঠাকুর বাড়ি।” “কোন ঠাকুর?” “ওবিন ঠাকুর—ছবি লেখে।” “কার কাচারি?” “নাম কর না, ফাটবে হাড়ি!”
এমনি দেশের নাম, লোকের নাম, বাড়ির নাম, আর নামের সঙ্গে
৩২