পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

রিদয়ের বাপ আমায় সাত-সিকেতে কিনে আনে; তারপর তোমাদের দলে ভিড়েছি।”

 চকা-নিকোবর নাক তুলে বললে—“তুমি তবে নেহাত সাধারণ-হাঁস দেখছি! খেতাব, মানসন্ত্রম, বোল্‌বোলা—কিছুই নেই! কোন সাহসে আমাদের দলে আসতে চাও শুনি?”

 খোঁড়া হাঁস খোঁড়া পাটি নাচিয়ে বললে—“আমি দেখাতে চাই যে সাধারণ হাঁসও কাজের হতে পারে।”

 চকা হেসে বললে—“সত্যি নাকি? কই, দেখাও দেখি কেমন কাজের কাজী তুমি?”

 এক হাঁস অমনি বললে—“ওড়ার কাজে কেমন যে তুমি মজবুত তাতো দেখিয়েচ!”

 অন্যে বললে—“হয়তো তুমি সাঁতারে পাকা।”

 খোঁড়া ঘাড়-নেড়ে বললে—“না, আমি সাঁতারু মোটেই নয়। আমি বর্ষার সময় নালাগুলো এপার-ওপার করতে পারি, তার বেশি নয়।” খোঁড়া হাস ভাবছিল, চকা তো তাকে আমতলিতে ফিরে পাঠাবেই স্থির করেছে, তবে কেন মিছে-কথা বলা? পষ্ট জবাব দেওয়াই ভালো—যা থাকে কপালে!

 চকা শুধোলে—“সাতার জানো না, তবে দৌড়তে মজবুত বোধ হয়?” বলেই চকা একবার তার খোঁড়া পায়ের দিকে চেয়ে চোখ মটকালে।

 খোঁড়া হাস গম্ভীর হয়ে বললে—“রাজহাঁস কোনো দিন ছুটে চলে না, তাই ছোটা আমার অভ্যেসই হয়নি।” বলে সে খোঁড়া-পা আরো খুঁড়িয়ে রাজহাঁস কেমন চলে একবার দেখিয়ে দিলে। তার মনে হচ্ছিল এইবার চকা বললে বুঝি—“তোমায় আমাদের দরকার নেই, ঘরে যাও।” কিন্তু ঠিক তার উল্টোটা হল। চক-নিকোবর দু’চারবার ঘাড়-নেড়ে বলল—

৪৩