চকা ‘যক্’ শুনে সাহস পেয়ে এগিয়ে এলে বললে—“বাপু, মানুষ-জাত খারাপ, বরাবর দেখে এসেছি। ওদের বিশ্বাস নেই। তবে তুমি যদি জামিন থাক, তবে রাতের মতো ওকে আমরা থাকতে দিই। এই হিমে চড়ায় শুয়ে ঘুমিয়ে ও যদি অসুখে পড়ে, তার দায়ী আমরা হব না—এইবেলা বুঝে দেখ!”
খোঁড়া হাঁস পিছবার পাত্র নয়; সে বললে—“সে ভয় নেই। চড়ায় এক রাত কেন, সাত রাত কাটালেও ওর কিছু হবে না। এমন সৎসঙ্গ, ভালো জায়গা বনে আর পাবে কোথা? ওর বড় জোর-কপাল যে চকা-নিকোবরের সঙ্গে এক-চরে শুতে পেয়েছে চকার বাছা বাগদী-চর; এতে শুয়ে আরাম কর।” বলে খোঁড়া রিদয়কে চোখ টিপলে।
চকা খোশমোদে খুশি হয়ে বললে—“তাহলে কাল কিন্তু ওর বাড়ি ফের চাই—কেমন?”
খোঁড়া বললে—“ওর সঙ্গে তাহলে আমাকেও ফিরতে হয়। আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছি—ওকে ছাড়ব না!”
চকা-নিকোবর উত্তর দিলে—“তুমি যেমন বোঝো। ইচ্ছে হয় আমাদের সঙ্গে থাকতে পার, ইচ্ছে হয় ফিরতে পার।” এই বলে চকা চরের মধ্যিখানে উড়ে বসল।
একে-একে বুনো হাঁস চরে গিয়ে ডানায় মুখ গুজে শুয়ে পড়েছে। খোঁড়া হাঁস রিদয়ের কানে-কানে বললে—“চরে বড় হিম; যত পার শুকনো ঘাস কুড়িয়ে নিয়ে আমার সঙ্গে এস।” রিদয় দু বোঝা শুকনো কুটো-কাটা হাঁসের পিঠে দিয়ে চেপে বসল। হাঁস তাকে চরের একটা গর্তে নামিয়ে বললে—“ঘাসগুলো বালির উপর বিছিয়ে দাও; আমি ওর উপর বসি, তুমি আমার ডানার মধ্যে ঢুকে পড়, আর ঠাণ্ডা লাগবে না।” রিদয়কে ডানার মধ্যে নিয়ে সুবচনীর খোঁড়া হাঁস—“এই আমায় তুমি আরামে
৪৬