পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

জানালে। খোঁড়া হাঁস বললে—“অত দৌড়ে কাঠবেরালের কাছে যাওয়াটা ভালো হয়নি। হঠাৎ কিছু-একটা এসে পড়লে সব জানোয়ারই ভয় পায়, রাগ করে। যখন জানোয়ারদের কাছে যাবে—সহজে, আস্তে, ভদ্রভাবে যাবে। হুটোপাটি করে কিম্বা চুপিচুপি চোরের মতো গেলেই তাড়া খাবে। তোমার স্বভাব একটু ভালো হয়ে এসেছে; এমনি আর দিনকতক ভালোমানুষটি থাকলেই, ওরা আপনিই তোমার সঙ্গে ভাব করবে। তুমি যদি তাদের উপকার কর, তবে তারাও তোমার সহায় হবে—বনের এই নিয়ম জেনে রাখ।”

 রিদয় সারাদিন ভাবছে, কেমন করে সে বনের পশু-পাখিদের কাজে লাগতে পারবে, এমন সময় খবর হল, বেতগায়ের একটা চাষা কাঠবেরালের বৌকে ধরে খাচায় বন্ধ করেছে; আর সে-বেচারার আটদিনের বাচ্চাগুলি না খেয়ে মরবার দাখিল! খোড়া হাস রিদয়কে বললে—“দেখ, যদি কাঠবেরালির উপকার করতে চাও তো এই ঠিক সময়।” রিদয় অমনি কোমর-বেঁধে সন্ধানে বেরুল।

 লক্ষ্মীবার পিঠে-পার্বণের দিন কাঠবেরালের বৌ-চুরি হল সুরেশ্বরে, আর শনিবার বাগবাজারে ছাপার কাগজে বার হল সেই খবর। কাগজওয়ালা-ছোঁড়াগুলো গলিতে-গলিতে হেঁকে চলল—

সুরেশ্বরে মজা ভারি—কাঠবেরালের বৌ চুরি!
বুড়ো-আংলা মানুষ এল, দুটো বাচ্ছা দিয়ে গেল।
মহন্ত ঠাকুর বড় দয়াল!
খাঁচা খুলে, ছেড়ে দিলে বাচ্ছা-সমেত কাঠ-বেরাল।
মজার খবর এক পয়সা—পড়ে দেখ এক পয়সা!

 কাণ্ডটা হয়েছিল এই: কাঠবেরালের বৌটি ছিল একেবারে শাদা ধপ-
৬৪