পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৭৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

নিয়ে সিঞ্চল, কালিম্পং, লিবং, সন্দকফু থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে কার্সিয়ং, টুং-সোনাদা হয়ে আবার ঘুমেতে নেমে একটু জল খেয়ে একচোট ঘুমিয়ে নিয়ে বেলা সাড়ে-এগারোটা নাগাদ দাৰ্জিলিঙ-ক্যালকাটা রোডের ধারে আলুবাড়ির গুম্পার কাছটায় তোমায় নামিয়ে দিতে পারি। আমরা তিব্বতের হাঁস তার ওদিকে আর আমাদের যাবার যো নেই—গেলেই গোরারা গুলি চালাবে!”

 এত সহজে দাৰ্জিলিঙ দেখা যাবে জেনে খোঁড়া হাঁস পর্যন্ত নেচে উঠল। চকা তখন বললে—“এতবড়ো দল নিয়ে তো পাহাড়ে চলা দায়, ছোট রেলের মতো আমাদেরও দল ছোট করে ফেলা যাক। বড়-দলটা নিয়ে আণ্ডামানি কামরূপে হাড়গিলে-চরে গিয়ে অপেক্ষা করুক; আর আমি, খোঁড়া, হংপাল, কাটচাল, নানকৌড়ি, চল দার্জিলিঙ দেখে আসি।” শিলিগুড়ি থেকে হাঁসের দল দুই ভাগ হয়ে চলল, ঠিক সেই সময় গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি নামল। কাঠ-ফাটা রোদের পরে নতুন বৃষ্টি পেয়ে মাটি ভিজে উঠেছে, পাতা গজিয়ে উঠছে, বনের পাখিরা আনন্দে উলু-উলু দিয়ে কেবলি বলতে লেগেছে, বৃষ্টির গান:

 বিষ্টি পড়ে টাপুর-টুপুর
 বাজছে বাদল গামুর-গুমুর
 ডাল-চাল আর মক্কা-মসুর
 ফোঁটায়-ফোঁটায় নামে—
 আকাশ থেকে নামে—
 জলের সাথে নামে—
 ঘরে-ঘরে নামে—
 টাপুর-টুপুর গামুর-গুমুর
 গামুর-গুমুর টাপুর-টুপুর।

৭৫