খারাপ করে দিলেও দেশটা একেবারে মাটি হয়ে যাবে না জেনে দেশটার উপরে বিশ্বামিত্রকে গড়া পেটা করতে দিতে বিশ্বকর্মা আপত্তি করলেন না। তাঁকে সমস্ত উত্তর দিকটা গড়তে ছেড়ে দিয়ে নিজে বাঙলাদেশটা গড়তে বসে গেলেন। বাঙলাদেশটা সুন্দর করে নদী গ্রাম ধানখেত সুন্দর বন আম কাঁঠালের বাগান খড়ের চাল দেওয়া ছোট-ছোট কুঁড়ে ঘর দিয়ে চমৎকার করে সাজিয়ে তুলতে বিশ্বকর্মার বেশি দেরি লাগল না, বুড়ো আঙুলের দু’চার টিপ দিয়ে মাঠগুলো আর আঙুলের দাগ দিয়ে নদী-নালা বানিয়ে তিনি কাজ শেষ করে বসে বিশ্বামিত্রের দিকে চাইলেন। বিশ্বামিত্র অমনি বলে উঠলেন,—‘আমার কাজ অনেকক্ষণ শেষ হয়েছে, দেখবে এস।’
বিশ্বকর্মার ছিষ্টি বাঙালাদেশ দেখে বিশ্বামিত্র এবারে নিন্দা করতে পারলেন না, চমৎকার! সুজলা সুফলা—বীজ ছড়ালেই ফসল, কোথাও উঁচু-নিচু এবড়ো-খেবড়ো পাহাড়-পর্বত নেই বললেই হয়, যতদূর চোখ চলে সবুজ খেত আর জলা। বিশ্বামিত্র দাড়ি নেড়ে বললেন—‘হ্যাঁ, এবারের ছিষ্টিটা হয়েছে মন্দ নয়, কিন্তু আমার দেশটা আরো ভাল হয়েছে দেখসে’ বলে বিশ্বামিত্র বিশ্বকর্মাকে উত্তর-ভারতবর্ষটা কেমন হয়েছে দেখতে বললেন।
বিশ্বকর্মার আদড়া উল্টে-পাল্টে বিশ্বামিত্র গড়েছেন। পাঞ্জাবে টেনেছেন পাঁচটা নদীর খাত, কিন্তু সেখানকার জমিতে সার মাটি না দিয়ে তিনি দিয়েছেন বালি আর কাঁকর, ধানও হবে না, মানুষগুলো কেবল যেন জল খেয়েই থাকবে! তারপর পাহাড় অঞ্চলে দুজনে উপস্থিত—বিশ্বকর্মা বিশ্বামিত্রের কীর্তি দেখে অবাক! সেখানে যা পেয়েছেন পাথর সবগুলো জড়ো করে এক হিমালয় পাহাড়ের ছিষ্টি করে বসেছেন বিশ্বামিত্র। তাঁর চিরকাল মাথায় আছে সূর্যের তাপ—গাছপালা মানুষ গরু সব জিনিসের পক্ষে ভালো, কাজেই তাঁর ছিষ্টি-করা পাহাড় দেশ তিনি