পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৯৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

গোঁফ ছিঁড়ে কিলিয়ে দাঁত ভেঙে ভূতেরা লম্ফ-ঝম্প করতে লাগল—

 মৌনী তুণ্ড হেঁট মুণ্ড দক্ষ মৃত্যু জানিছে
 মৈল দক্ষ, ভূত যক্ষ সিংহনাদ ছাড়িছে।

 দক্ষ-নিপাত দেখে সতীর মা কেঁদে শিবকে বললেন—

 সতীর জননী আমি, শাশুড়ী তোমার,
 তথাপি বিধবা দশা হইল আমার?
 প্রসূতির বাক্যে শিব সলজ্জ হইল,
 রাজ্যসহ দক্ষরাজে বাঁচাইয়া দিল।
 ধড়ে মুণ্ড নাহি দক্ষ দেখিতে না পায়,
 উঠে পড়ে ফিরে ঘুরে কবন্ধের প্রায়—

 কন্দ-কাটা দক্ষের দুর্গতি দেখে ভূতেরা সব হাসতে লাগল, তখন শিবের হাতের কাছে ছিল পাহাড়ি একটা রামছাগল দড়ি দিয়ে হাড়-কাঠে বাঁধা। তিনি সেইটে নন্দীকে দেখিয়ে দিলেন। নন্দী তার মুড়োটা কেটে দক্ষের কাঁধে জুড়ে দিয়ে দক্ষ প্রজাপতির ডানা দুটো কেটে নিয়ে চলে গেল, শিব সতীদেহ নিয়ে কাঁদতে-কাঁদতে কৈলাসে গেলেন! এর পরে আরও কথা আছে, কিন্তু এইখানেই দক্ষযজ্ঞ শেষ—হরি হরি বল সবে পালা হৈল সায়—বলে রিদয় চুপ করলে।

 রামছাগল ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকালে, খানিক চেয়ে থেকে বললে— “ফুঃ, এমন আজগুবি কথা তো কখনো শুনিনি। বুড়ো হয়ে শিং ক্ষয়ে গেল, এমন কথা তো কোনোদিন শুনলেম না যে প্রজাপতির মাথা হয় রামছাগলের মতো আর পাহাড়গুলোর গজায় ডানা!”

 রামছাগল ছেলেদের বললেন:

১০০