“যিনি গভীর-প্রজ্ঞ, মেধাবী, সত্যাসত্য পথপ্রদর্শনে পণ্ডিত, উত্তমপদ-নির্ব্বাণ-প্রাপ্ত আমি তাঁহাকে ব্রাহ্মণ বলি।”
“আপনার দুঃখের ক্ষয় হইয়াছে জানিয়া, যিনি এই সংসারেই ভারশূন্য ও বন্ধনমুক্ত তাঁহাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।”
“যিনি বৈরীদিগের সহিত মিত্রভাব দেখাইয়া থাকেন, দণ্ডবিধানকারীর প্রতি সন্তোষভাব দেখাইয়া থাকেন এবং সংসারীদিগের মধ্যে অনাসক্ত আমি তাঁহাকে ব্রাহ্মণ বলি।”
মহাপুরুষ বুদ্ধের মতে বাহ্য কোনো কারণে কিংবা আকস্মিক জন্ম হেতু কেহ ব্রাহ্মণ হইতে পারে না। ধম্মপদে উক্ত হইয়াছেঃ—
“জটাধারণদ্বারা, গোত্রদ্বারা এবং জাতিদ্বারা কেহ ব্রাহ্মণ হয় না। কিন্তু যিনি ধর্ম্মে ও সত্যে প্রতিষ্ঠিত তিনিই শুচি ও ব্রাহ্মণ।”
সুতরাং একথা স্বীকার করিতেই হইবে যে ভগবান্ বুদ্ধ বংশানুগত জাতিভেদকে আদৌ গ্রাহ্য করিতেন না।
“বৃষলসূত্রে” তিনি তাঁহার এই অভিমত অতি সুস্পষ্ট ভাষায় অগ্নিভরদ্বাজের নিকট ব্যক্ত করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন—জন্ম হেতু কেহ ব্রাহ্মণ বা চণ্ডাল হয় না, কর্ম্ম দ্বারাই মানুষ ব্রাহ্মণ, কর্ম্ম দ্বারাই মানুষ চণ্ডাল হইয়া থাকে। উক্তসূত্রে তিনি চণ্ডালের নিম্নলিখিত লক্ষণ নির্দেশ করিয়াছেনঃ—
“যে পাপাচার কপটী ক্রোধী ও হিংসক, যে অসত্য দর্শন আশ্রয় করিয়াছে, যে মায়াবী, যে সর্ব্বদা প্রবঞ্চনা করে, সেই ব্যক্তি চণ্ডাল।”
“যে ব্যক্তি নিজ হস্তে পশু পক্ষী প্রভৃতি জীবদিগকে হিংসা করে, যে নিষ্ঠুর, সেই ব্যক্তি চণ্ডাল।”
“যে অকারণ অন্যকে নিগৃহীত করে, যে পরের ধন অপহরণ