আধ্যাত্মিক উন্নতির কোনো খানে সীমারেখা টানিবার উপায় আর নাই। যাহা চরম তাহা একসময়ে মানুষের কাছে আপনি প্রকাশিত হয়, কিংবা সেই অনির্ব্বচনীয়তার মধ্যে সাধনার শেষে সাধক একদিন স্বয়ং উপস্থিত হন। মানুষের বাক্য ইহাকে আকার দান করিয়া অন্যের কাছে উপস্থিত করিতে পারে না। সাধনায় সিদ্ধিলাভ করিয়া যাঁহার এই অনির্ব্বচনীয় লোকে উত্তীর্ণ হইয়াছেন, তাঁহারা অন্যকে এই পথের সন্ধান বলিয়া দিতে পারেন, কিন্তু সেই অনির্ব্বচনীয় চরমকে ভাষায় প্রকাশ করিয়া বলিবেন কি করিয়া? বুদ্ধ বলেন, সাধকই আপনার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করিয়া নিজের অধ্যবসায়ে সমস্ত পথ অতিক্রম করিয়া যাত্রার শেষে চরমে উত্তীর্ণ হইবেন। এইজন্য দৃঢ়কণ্ঠে সাধকদিগকে তিনি কহিতেছেন—তোমরা আপনারাই আপনাদের নির্ভরের দণ্ড হও, অন্য কাহারো উপর তোমরা নির্ভর করিও না। তিনি মানবকে অনির্ব্বচনীয় রহস্যের কথা না বলিয়া নির্ভয়ে তেজের সহিত আহ্বান করিয়া যাহা বলেন, তাহার মর্ম্ম এই—
তোমাদিগকে অমঙ্গল হইতে মঙ্গলের মধ্যে আসিতে হইবে, তোমাদিগকে রোগ শোক জরা মৃত্যু হইতে নির্ব্বাণের শান্তির মধ্যে আসিতে হইবে। হে নির্ব্বাণ পথের যাত্রিদল, তোমরা আমার নিকট চলিয়া আইস, আমি তোমাদিগকে নির্ব্বাণের সরল পথ দেখাইয়া দিব। সে পথের কোন রহস্য আমার অবিদিত নাই।