যে সাধক শ্রেয়কে লাভ করিতে চাহেন, তাঁহাকে অনলস হইয়া অন্তরে বাহিরে শুচি হইতে হইবে। এই শুচিতালাভ সাধনার ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান কথা। ইহারই জন্য ব্রহ্মচর্য্যব্রত-পালন, ইহারই জন্য শীলগ্রহণ। অধ্যাত্মদৃষ্টি প্রস্ফুটিত না হইলে, সত্যের সাক্ষাৎকার হয় না। এইজন্যই সাধক সর্ব্বপ্রযত্নে মনকে নির্ম্মল করেন। তিনি জানেন, যখনি তাঁহার মন স্বচ্ছ ও স্থির হইবে, তখনি সেখানে সত্য প্রতিবিম্বিত হইবে।
কূর্ম্ম যেমন অনায়াসে নিজ শুণ্ড প্রত্যাহরণ করিয়া থাকে, সাধক তেমনি অভ্যাসের দ্বারা নিজের মনকে সর্ব্বপ্রকার কলুষ হইতে প্রত্যাহত করিতে যত্নশীল হন্। মন যাহার বশীকৃত হয় নাই, তাহার ধ্যান নাই, উপাসনা নাই, সুখ নাই, শান্তি নাই। মনের গুপ্ত স্থানে যে সমুদায় পাপাভিলাষ জমিয়া থাকে, সেগুলি পণ্ডিত ব্যক্তির মনকেও ব্যাকুল করিয়া দেয়। সুতরাং, পাপকে পাপ বলিয়া বুঝিলেই আমরা ইহার হাত হইতে নিষ্কৃতি পাইতে পারিব এ কথা সত্য নহে। অথবা বাহিরের ব্যবহারে ভাল মানুষ হইলেও, সাধনার জীবনে আমরা অগ্রসর হওয়ার আশা করিতে পারি না। এইজন্যই ধম্মপদে উক্ত হইয়াছে—
আকাসে চ পদং নত্থি সমণে নত্থি বাহিরে।
আকাশে যেমন পথ নাই, তেমনি বাহ্যকর্ম্মের দ্বারা মনুষ্য শ্রমণ অর্থাৎ সাধু হয় না। বাহির হইতে হস্তপদাদি কর্ম্মেন্দ্রিয়সমূহকে সংযত