পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৩৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধসাধনা

 একদিকে ভোগবিলাসের আতিশয্য, অপরদিকে দুঃসহ কৃচ্ছসাধন এই দুইয়ের মাঝখানে মুক্তির একটি উদার রাজবর্ত্ম প্রসারিত আছে। আড়াই হাজার বৎসর পূর্ব্বে ভগবান্‌ বুদ্ধদেব সাধনার এই মধ্যপথটি আবিষ্কার করেন। মৃগদাবে তিনি তাঁহার পিপাসু ভক্তদিগকে বলিয়াছেন—বৎসগণ, কৃচ্ছসাধন দ্বারা মুক্তির অন্বেষণ করিও না, অথবা ভোগবিলাসের আতিশয্যের মধ্যে আত্মবিস্মৃত হইও না। মৎস্যমাংস-ত্যাগ, অচেলকত্ব, মস্তকমুণ্ডন, জটাবল্কলধারণ, বিভূতিলেপন, হোমপ্রভৃতি দ্বারা আমাদের মনের কলুষ দূর হইতে পারে না। যাহার মোহ দূর হয় নাই, তাহার পক্ষে বেদপাঠ, দান, যাগযজ্ঞ, কঠোর তপস্যা, সমস্তই নিস্ফল।

 ক্রোধ, অমিতাচার, গোঁড়ামি, প্রতারণা, অহঙ্কার, দ্বেষ, ইত্যাদি কুপ্রবৃত্তি চিত্তকে মলিন করে; মৎস্যমাংসাদি-ভোজনে মন অপবিত্র হয় না। পূর্ব্বোক্ত উভয়প্রকার বাড়াবাড়ির মধ্যবর্ত্তী সাধনমার্গের কথা আমি তোমাদিগকে বলিব। শরীরকে অসহ্য ক্লেশদান করিয়া অস্থিচর্ম্মসার করিলে সাধক নানারূপ দুর্ব্বল চিন্তায় ও সংশয়ে আকুল হইয়া উঠেন। উক্তরূপ কঠোর তপশ্চর্য্যা দ্বারা ইন্দ্রিয়বিজয় দূরের কথা, পার্থিব সাধারণ জ্ঞান অর্জ্জন করাও সম্ভবপর হয় না। যিনি তৈলের পরিবর্ত্তে জলদিয়া বাতি পূর্ণ করিবেন, তিনি কেমন করিয়া আলোক লাভ করিবেন? পচা

১০৮