হয় না এবং উৎপন্ন কামচ্ছন্দ প্রহীণ হয়। হে ভিক্ষুগণ, আমি অন্য একধর্ম্মও দেখিতেছি না, যাহার প্রভাবে অনুৎপন্ন ব্যাপাদ অর্থাৎ হিংসা এবং পরের অনিষ্টকামনা ইত্যাদি উৎপন্ন হয় না, কিংবা উৎপন্ন ব্যাপাদ প্রহীণ হয়। হে ভিক্ষুগণ, জ্ঞানপূর্ব্বক মৈত্রী-চিত্ত-বিমুক্তি মনন করিলে অনুৎপন্ন ব্যাপাদ উৎপন্ন হয় না এবং উৎপন্ন ব্যাপাদ বিনষ্ট হয়, অর্থাৎ মন যখন সর্ব্বপ্রাণীর প্রতি মৈত্রীময় হয়, তখন কামাভিলাষ, পরের অহিতচিন্তা ও ঔদ্ধত্য প্রভৃতি দূর হইয়া থাকে।
বৌদ্ধসাধনার গোড়াকার কথা অবিদ্যার সহিত সংগ্রাম। বোধিদ্রুমতলে মহাপুরুষ বুদ্ধ যে দিন সাধনায় সিদ্ধি লাভ করিলেন, সেদিন মানবজীবনের কোন্ দুর্জ্ঞেয় রহস্য তাঁহার নিকট উদ্ঘাটিত হইল? তিনি তাঁহার নবলব্ধ প্রজ্ঞা-দৃষ্টির দ্বারা দেখিলেন—অবিদ্যা হইতে সংস্কার, সংস্কার হইতে বিজ্ঞান, বিজ্ঞান হইতে নামরূপ, নামরূপ হইতে ষড়ায়তন, ষড়ায়তন হইতে স্পর্শ, স্পর্শ হইতে বেদনা, বেদনা হইতে তৃষ্ণা, তৃষ্ণা হইতে উপাদান, উপাদান হইতে ভব, ভব হইতে জন্মলাভ হয়। এই জন্ম হইতেই মানব রোগ শোক জরা ব্যাধি মৃত্যু ও দুঃখের যন্ত্রণা ভোগ করিয়া থাকে।